ঢাকা ০২:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

বিপদগামী যুব সমাজ, শ্রীবরদী সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৪:২৯:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯৬৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শেরপুর প্রতিনিধিঃ

 

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত পথে চোরাচালান আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বালিজুড়ি, কর্নঝুড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভারত থেকে চোরাই পথে গাঁজা, ইয়াবা, হিরোইন, মোটরসাইকেল, গরুসহ ভারতীয় নিষিদ্ধ ঘোষিত পন্য আমদানী করে আসছে।

এসব পন্য আমদানী করে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে অবাধে বাজারজাতের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে। স্থানীয় বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, সীমান্তের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে ভারতীয় চোরাই গরুসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত পন্য অবাধে বেচা-কেনার পাশাপাশি চলছে জমজমাট হুন্ডি ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থেকে এসব চোরাকারবারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা দলীয় প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তে অবাধে চালিয়ে আসছে জমজমাট চোরাই ব্যবসা।

এখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা, মদ-গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য। ফলে এ উপজেলার যুব সমাজ বিপদগামী হয়ে পড়ছে। এ সীমান্তে চোরাচালানী বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত পথে অবৈধ ভাবে ভারতে যাতায়াতের সময় বিএসএফএর গুলিতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে সীমান্ত হত্যার ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বেশ কয়েকজন চোরাকারবারী নিখোঁজও রয়েছে। থানা পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থেকে চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িত অনেকের নামে বিভিন্ন সময় মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে। কিন্তু মামলা থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও দাপটের সাথে চালিয়ে আসছে চোরাচালানের ব্যবসা।

২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবলীগ নেতাকে কর্ণঝোড়া বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে ওই যুব নেতা মুক্তি পায় বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে সীমান্ত পথে অবাধে চলছে চোরাচালানের ব্যবসা। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে চোরাচালানের ব্যবসা পরিচালনার কারনে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননা। আবার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে চোরাই ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে নাজেহাল করা হয়। এমন অভিযোগও রয়েছে। মাঝে মধ্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ইয়াবা, মদ ও গাঁজাসহ ব্যবসায়ীদের আটকও করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে মামলাও দেয়া হচ্ছে।

কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালানীর ব্যবসা। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের এদের অনেকের নামেই রয়েছে মাদক মামলা। শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, প্রতিমাসে এ থানায় ১৫-২০ টি মাদক মামলা হয়। তিনি আরও বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রনে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

শ্রীবরদী উপজেলার কর্নঝুড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মাহমুদুল হাসান বলেন, গত ২ মাসে ৫টি চোরাই গরু ও ৩ টি মাদক মামলা হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

বিপদগামী যুব সমাজ, শ্রীবরদী সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান 

আপডেট সময় : ০৪:২৯:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

শেরপুর প্রতিনিধিঃ

 

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত পথে চোরাচালান আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বালিজুড়ি, কর্নঝুড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভারত থেকে চোরাই পথে গাঁজা, ইয়াবা, হিরোইন, মোটরসাইকেল, গরুসহ ভারতীয় নিষিদ্ধ ঘোষিত পন্য আমদানী করে আসছে।

এসব পন্য আমদানী করে স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে অবাধে বাজারজাতের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে। স্থানীয় বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, সীমান্তের বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে ভারতীয় চোরাই গরুসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ ঘোষিত পন্য অবাধে বেচা-কেনার পাশাপাশি চলছে জমজমাট হুন্ডি ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থেকে এসব চোরাকারবারী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা দলীয় প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তে অবাধে চালিয়ে আসছে জমজমাট চোরাই ব্যবসা।

এখানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা, মদ-গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য। ফলে এ উপজেলার যুব সমাজ বিপদগামী হয়ে পড়ছে। এ সীমান্তে চোরাচালানী বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত পথে অবৈধ ভাবে ভারতে যাতায়াতের সময় বিএসএফএর গুলিতে মাঝে মধ্যেই ঘটছে সীমান্ত হত্যার ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, বেশ কয়েকজন চোরাকারবারী নিখোঁজও রয়েছে। থানা পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্র ছায়ায় থেকে চোরাচালান ব্যবসার সাথে জড়িত অনেকের নামে বিভিন্ন সময় মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে। কিন্তু মামলা থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও দাপটের সাথে চালিয়ে আসছে চোরাচালানের ব্যবসা।

২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক যুবলীগ নেতাকে কর্ণঝোড়া বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুচলেকা দিয়ে ওই যুব নেতা মুক্তি পায় বলে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে সীমান্ত পথে অবাধে চলছে চোরাচালানের ব্যবসা। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে চোরাচালানের ব্যবসা পরিচালনার কারনে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননা। আবার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে চোরাই ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে নাজেহাল করা হয়। এমন অভিযোগও রয়েছে। মাঝে মধ্যে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ইয়াবা, মদ ও গাঁজাসহ ব্যবসায়ীদের আটকও করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে মামলাও দেয়া হচ্ছে।

কিন্তু বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালানীর ব্যবসা। বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের এদের অনেকের নামেই রয়েছে মাদক মামলা। শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, প্রতিমাসে এ থানায় ১৫-২০ টি মাদক মামলা হয়। তিনি আরও বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রনে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

শ্রীবরদী উপজেলার কর্নঝুড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মাহমুদুল হাসান বলেন, গত ২ মাসে ৫টি চোরাই গরু ও ৩ টি মাদক মামলা হয়েছে। চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।