নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় প্রাইভেট শিক্ষকের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৪) যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিতাই চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। একটি শ্রেণি কক্ষের আসবাবপত্র ভাংচুর চালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে, গতকাল সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রী ও তার সহপাঠীরা প্রধান শিক্ষকরে কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয়ের পরীক্ষা এবং ক্লাসের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষক নিতাই চন্দ্র দেবনাথ কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক এবং উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের যুগী বাড়ির বেনু লাল দেবনাথের ছেলে।
কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নোমান উদ্দিন ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী একই স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক নিতাই চন্দ্র দেবনাথের কাছে প্রাইভেট পড়ে। প্রতিদিনের ন্যায় সোমবার সকালে সে ওই শিক্ষকের কাছে পড়তে যায়। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কৌশলে সকল শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ার কক্ষ থেকে বের করে দেয়। শেষে সে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয় এবং জোরপূবর্ক কিস দেয়। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীও তার সহপাঠিরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে এমন অভিযোগ করে।
কালিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামছুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে মুঠোফোনে অবহিত করে। তাৎক্ষণিক প্রধান শিক্ষককে এ ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্লাসের সকল কার্যক্রম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে তারা এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক নিতাই চন্দ্র দেবনাথের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, গতকাল এ ঘটনা ঘটে। আজ মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগের কথা আমাকে জানিয়েছেন। অভিযোগের আলোকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।