কাস্টমস-ভ্যাটে করোনা আক্রান্ত বেড়ে ৩৬, সুস্থ ২

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০

ডেস্ক::

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। প্রতিদিনই ভ্যাট কমিশনারেট ও কাস্টম হাউসে নতুন করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেকেই আক্রান্ত, তবে উপসর্গ নেই। আবার অনেকেই উপসর্গ নিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসে অনেকই আছেন হোম আইসোলেশনে।

* ঢাকা কাস্টম হাউসে নতুন করে ২৭ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছে

* আক্রান্তের শীর্ষে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে

* শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশন

* আক্রান্তদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছে বাকাএভ

রাজস্ব আহরণ ও সেবা প্রদানের মতো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তারা আক্রান্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার (২ জুন) পর্যন্ত কাস্টমস-ভ্যাটে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬। এর মধ্যে দুইজন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তদের যার মধ্যে একজন ডেপুটি কমিশনার রয়েছেন। তিনি রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটে কর্মরত। তবে আক্রান্তের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে। সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট ও কাস্টম হাউস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, মোট ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন ডেপুটি কমিশনার (ডিসি), ২০ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, ১১ জন রাজস্ব কর্মকর্তা, দুইজন সাব ইন্সপেক্টর, একজন সেপাই ও একজন কম্পিউটার অপারেটর।

আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এ হাউজে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ জন। এর মধ্যে দুইজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুস্থ হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ জুন) নতুন করে দুইজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে সোমবার (১ জুন) নতুন করে দুইজন রাজস্ব কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে আক্রান্ত রাজস্ব কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়ালো আট। এছাড়া সাতজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর। একজন রাজস্ব কর্মকর্তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাকে প্লাজমা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম বলেন, আক্রান্ত কমাতে কর্মকর্তাদের দুই শিফটে কাজ করানো হয়েছে। করোনা উপসর্গ দেখার সাথে সাথে সন্দেহজনক কর্মী ও সংশ্লিষ্ট গ্রুপ ও শিফটে দায়িত্বরতদের ছুটি ও হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিদিন আমরা বন্দর হাসপাতালের মাধ্যমে ১৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছি। তাও পর্যাপ্ত নয়। ফলে বন্দর হাসপাতালের অধীনে করোনা পরীক্ষার একটি বুথ করার উদ্যোগ নিয়েছি। স্বাস্থ্য বিভাগকে অনুরোধ করেছি আলাদা একটি বুথ করতে।

সূত্র আরো জানায়, নতুন করে ঢাকা কাস্টম হাউসে একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এ হাউসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো পাঁচ। এর মধ্যে চারজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন রাজস্ব কর্মকর্তা। আক্রান্তদের সবাই বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপরদিকে, ঢাকা কাস্টম হাউসে নতুন করে ২৭ জনের নমুনা নেওয়া হয়। বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ নমুনা নেয়। ২৪ জনের রেজাল্ট এসেছে। এর মধ্যে একজনের নমুনা পজেটিভ।

সূত্র জানায়, সোমবার নতুন করে ভ্যাট দক্ষিণ কমিশনারেটে দুইজন কর্মকর্তার নমুনা পজেটিভ এসেছে। একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। এর আগে এ কমিশনারেটের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এ কমিশনারেটের আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো তিন।

সূত্র জানায়, নতুন করে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের দুইজন সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার তাদের নমুনা পজেটিভ আসে। দুইজনই আদমজী ইপিজেডে কর্মরত। সিলেট ভ্যাট কমিশনারেটে একজন সিপাই, ঢাকা পূর্ব কমিশনারেটে একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া অন্যান্য আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে-আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসের একজন রাজস্ব কর্মকর্তা ও একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। ভ্যাট পশ্চিম কমিশনারেটের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। ভ্যাট উত্তর কমিশনারেটের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। চট্টগ্রামের ভ্যাট কমিশনারেটের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা।

অপরদিকে, বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ) ৩০তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি রংপুর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে ডেপুটি কমিশনার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) এ কর্মকর্তার করোনা সনাক্ত হয়। বর্তমানে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিসিএস (কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং মূসক, নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মসফিকুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, আক্রান্তদের ও তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সাধ্যানুযায়ী চিকিৎসায় সহযোগিতা করা হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে দ্বিতীয়বার ঢাকা কাস্টম হাউসে ২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নমুনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সদস্যদের বাসায় গিয়ে কভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, শমরিতা হাসপাতালের সাথে চুক্তি সই হচ্ছে, যাতে সদস্যরা চিকিৎসা পায়।

বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) প্রতিনিধি মো. ফরিদুল ইসলাম ভূঞা মুকুল শেয়ার বিজকে বলেন, আক্রান্তদের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আক্রান্ত সহকর্মীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বাসায় চিকিৎসারত ঢাকায় সহকর্মীদের অবস্থা কোন কারণে অবনতি হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০