ভূমিহীন পরিবারের বন্দোবস্তের জমি দখলের চেষ্টা, চাঁদা দাবি
- আপডেট সময় : ০৭:৩২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় জাল-জালিয়াতি ও প্রভাব খাটিয়ে এক ভূমিহীন পরিবারের বন্দোবস্তের জমি দখলের চেষ্টা এবং ওই পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, মিথ্যা মামলা প্রদান ও চাঁদা দাবির অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার (০৪ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহর মাইজদীতে একটি স্থানীয় পত্রিকা অফিসে আয়োজিত সংবাদিক সম্মেলনে উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের উত্তর জগদানন্দ গ্রামের ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ গংদের ভূূমিদস্যু আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী ভূমিহীন হোসনেআরা বেগমের বড়ভাই আব্দুল হালিম।
সংবাদিক সম্মেলনে আব্দুল হালিমের পিতা আবুল হাসেম, বোন হোসনেআরা বেগম, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি শেখ আহম্মদ, হাবিব উল্যাহ, আনোয়ার হোসেন, আজিজুল হক, আবদুল মালেক, মমিনুল হক, সফিক উল্যা, আনোয়ার হোসেনসহ গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণীর অর্ধশতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল হালিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার ছোটবোন হোসনেআরা বেগম ও তার স্বামী আবদুল হাই একটি ভূমিহীন পরিবার। সরকারের বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী ২৮৯/৯৮-৯৯ নথি মূলে আমার বাবার দখলীয় এক একর ভূমি আমার বোন এবং বোন জামাইয়ের নামে বন্দোবস্ত দেয় সরকার। ওই ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার পর তারা বন্দোবস্তীয় ভূমিতে ভোগদখলে থেকে সরকারের যাবতীয় খাজনা ও কর পরিশোধ করায় সরকার তাদের নামে শুদ্ধরুপে সর্বশেষ বিএস খতিয়ানসহ যাবতীয় দলিলাদি প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় ভূূমিদস্যু ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ নিরীহ মানুষের বন্দোবস্তীয় ভূমিতে ভুয়া ডিগ্রী খুলে মানুষজনকে হয়রানি করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় উল্লেখিত ভূমিদস্যুরা আমার বোনের জমিতে লোলুপ দৃষ্টি দেয়। ২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর ভূমিদস্যু ইব্রাহিম খলিল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমার বোনের মালেকীয় ও দখলীয় ভূমিতে ধানের চারা রোপন করতে গেলে আমরা কবিরহাট থানায় অভিযোগ করি। পরে থানা-পুলিশ উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে ভূমিদস্যু ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ গংরা ভূমির মালিকানার কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়ে থানা থেকে পালিয়ে যান।
আব্দুল হালিম আরো বলেন, ভূমিদসু্যুরা থানা থেকে পালিয়ে গিয়ে ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করে অপপ্রচার চালায়। অথচ আমি দীর্ঘদিন যাবৎ জেলা শহর মাইজিদীতে বসবাস করে আসছি। তারা আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন, যা সম্পূন্ন মিথ্যা-বানোয়াট। এছাড়া ভূমিদস্যু ইব্রাহিম খলিল আমার এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের জন্য স্থানীয় সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিমকে নির্দেশ দিলে মামলার বাদী ইব্রাহিম খলিল স্থানীয় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করে দেন। পরে প্রতিবেদনটি আদালতে ভুুয়া প্রমাণিত হয়। এভাবে সরকারি বন্দোবস্তের ভূমি জোরপূর্বক দখলে ব্যর্থ হয়ে অপপ্রচার, মিথ্যা মামলা ও চাঁদা দাবিসহ বিভিন্নভাবে পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ভুক্তভোগী ভূমিহীন নারী হোসনেআরা বেগম অভিযোগ করেন, তিনি সরকারের এক একর ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয় ভূমিদস্যু ইব্রাহিম খলিল, জয়নাল আবদিন ও ইউসুফ গংরা তার জমি জোরপূর্বক দখল করে নিতে চায়। ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে তিনি তার ভাইদের সহযোগিতায় আইনের আশ্রয় নিতে গেলে ভূমিদস্যুরা তার ভাইদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, চাঁদা দাবি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এই হয়রানি ও নিজ সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ছেন ভুক্তভোগী নারী।