ঢাকা ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে: নাছির Blind Amjad receives Eid gift from Tarique Zia জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আমজাদ পেলো তারেক জিয়ার ঈদ উপহার ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা School student murdered in trivial incident: Police unravel mystery নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল ছাত্র খুন: রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের ইতালি মার্কেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিখোঁজের ২ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিজ এলাকায় হামলার শিকার এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৫

কাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কার হবে জয়ের মুকুট

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০৫ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক:

 

সব কল্পনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে তীব্র লড়াই হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এরইমধ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় কমলা-ট্রাম্পের পরস্পরিরোধী আক্রমণে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলে, বিজয়ী কে তা জানতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। তবে সব পূর্বাভাস অনুযায়ী এখন পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই ইঙ্গিতই মিলছে।

 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ও সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে লড়াই জোরাল হবে। কয়েকটি এলাকায় ব্যবধান খুবই কম হতে পারে। ফলে পুনরায় ভোট গণনারও প্রয়োজন পড়তে পারে। আর যদি ভোটের ব্যবধান খুব কম হয় বা কোনো প্রার্থী নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ করেন, তবে ফল ঘোষণায় আরো বেশি সময় লাগতে পারে। ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তোলার কারণে কিছু রাজ্যের ফল চূড়ান্ত হতে সময় লেগেছিল।

সে বছরের মতো এই রাজ্যগুলোতে ভোটগণনা ও ফল ধীরগতির হয়ে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই রাজ্যগুলোই ফল নির্ধারণে চূড়ান্ত ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে মিশিগানের মতো কিছু এলাকায় ভোটগ্রহণ এবার আগের চেয়ে দ্রুতগতির হবে। কারণ গতবার করোনা মহামারির কারণে ভোটগ্রহণ ধীরগতির ছিল।

জরিপে জাতীয়ভাবে কে এগিয়ে

জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, রোববার পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহগুলোয় কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এরপর থেকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিকে পূর্বের অবস্থানই ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস। তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।

একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় এগিয়ে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণী দোদুল্যমান সাত রাজ্যে শেষ সময়ের জরিপে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে চমক দেখা গেছে। সোমবার ব্রাজিল-ভিত্তিক এই জরিপ সংস্থা অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপের ফলে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান সাত রাজ্যের সবকটিতে কমালা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাদের ব্যবধান একেবারে সামান্য।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাট দলীয় কমালা হ্যারিসের মাঝে ব্যাপক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য জনমত জরিপেও। অ্যাটলাস ইনটেলের জরিপের ফলে দেখা যায়, দোদুল্যমান রাজ্য অ্যারিজোনায় জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

দোদুল্যমান আরেক রাজ্য নেভাদায় জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া নর্থ ক্যারোলিনায় ট্রাম্প ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কমালা হ্যারিস পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ জনসমর্থন।

অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপ অনুযায়ী, জর্জিয়া রাজ্যেও এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই রাজ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন। মিশিগানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

আর পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ ও কমালা হ্যারিস ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং উইসকনসিনে ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিস ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।

দেশটির সাত রাজ্যে অ্যাটলাসের পরিচালিত এই জনমত জরিপে গড়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনি কমালা হ্যারিসের ৪৭ দশমিক ২ শতাংশের তুলনায় ৪৯ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।

অ্যাটলাস ইনটেল বলেছে, ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও সবচেয়ে নির্ভুল জনমত জরিপ প্রকাশ করেছিল তারা। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি দোদুল্যমান রাজ্যে করা তাদের জনমত জরিপের ফল সঠিক হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যই প্রতিটা নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে একই দলকে ভোট দিয়ে আসে। আমেরিকান নির্বাচনে রিপাবলিকান দুর্গ বলে পরিচিত এই অঙ্গরাজ্যগুলোকে বলা হয় রেড স্টেট বা লাল রাজ্য। আর ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য পাওয়া স্টেটগুলোকে বলা হয় ব্লু স্টেট বা নীল রাজ্য।

ফলে এসব রাজ্য নিয়ে প্রার্থীদের খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না বা মনোযোগ দিতে হয় না। কিন্তু হাতে গোনা কিছু অঙ্গরাজ্য আছে যে রাজ্যগুলোর ভোট, প্রার্থীদের কারণে যে কোনও শিবিরে যেতে পারে।

ফলে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা নির্দিষ্ট কিছু সুইং স্টেটের দিকে নজর দেন যেখানে ভোট কোন পার্টির পক্ষে যাবে, তা নির্দিষ্ট করে বোঝা যায় না। এগুলোই হল আমেরিকান নির্বাচনের ব্যাটলগ্রাউন্ড বা নির্বাচনী রণক্ষেত্র। এগুলোকেই অনেকে বলে থাকে বেগুনি রাজ্য।

প্রার্থীদের কাছে এসব অঙ্গরাজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। যেগুলোকে বলা হয় ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট বা নির্বাচনী রণক্ষেত্র। আর এই অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটই শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় জয় পরাজয়ের মূল চাবিকাঠি। এই রাজ্যগুলোতেই হয় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যগুলো ২০১৬ সালে এভাবেই ব্যাটল-গ্রাউন্ড স্টেট হয়ে উঠেছিল। প্রত্যেক নির্বাচনের সময় দেখা গেছে যেসব রাজ্যের ভোট বেশি, প্রার্থীরা সেসব রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণার পেছনে অনেক বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় করে থাকেন। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, ইউএসএ টুডে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

কাল মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কার হবে জয়ের মুকুট

আপডেট সময় : ০৭:৫৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক:

 

সব কল্পনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে তীব্র লড়াই হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এরইমধ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় কমলা-ট্রাম্পের পরস্পরিরোধী আক্রমণে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলে, বিজয়ী কে তা জানতে কয়েকদিন লেগে যেতে পারে। তবে সব পূর্বাভাস অনুযায়ী এখন পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়েরই ইঙ্গিতই মিলছে।

 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় ও সুইং স্টেট বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোতে লড়াই জোরাল হবে। কয়েকটি এলাকায় ব্যবধান খুবই কম হতে পারে। ফলে পুনরায় ভোট গণনারও প্রয়োজন পড়তে পারে। আর যদি ভোটের ব্যবধান খুব কম হয় বা কোনো প্রার্থী নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ করেন, তবে ফল ঘোষণায় আরো বেশি সময় লাগতে পারে। ২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তোলার কারণে কিছু রাজ্যের ফল চূড়ান্ত হতে সময় লেগেছিল।

সে বছরের মতো এই রাজ্যগুলোতে ভোটগণনা ও ফল ধীরগতির হয়ে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই রাজ্যগুলোই ফল নির্ধারণে চূড়ান্ত ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে মিশিগানের মতো কিছু এলাকায় ভোটগ্রহণ এবার আগের চেয়ে দ্রুতগতির হবে। কারণ গতবার করোনা মহামারির কারণে ভোটগ্রহণ ধীরগতির ছিল।

জরিপে জাতীয়ভাবে কে এগিয়ে

জাতীয়ভাবে ভোটারদের নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে গড়ে ট্রাম্পের চেয়ে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে আছেন কমলা। জুলাইয়ে কমলা হ্যারিস ডেমোক্র্যাটদের প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জাতীয়ভাবে যেসব জনমত জরিপ হয়েছে, তার গড় করে দেখা যাচ্ছে, রোববার পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের পক্ষে সমর্থন ৪৮ শতাংশের। আর ট্রাম্পের সমর্থন ৪৭ শতাংশ।

ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হওয়ার পর নির্বাচনী প্রচার শুরুর প্রথম সপ্তাহগুলোয় কমলা হ্যারিসের দিকে সমর্থন বেশি ছিল। আগস্টের শেষে দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এরপর থেকে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের শুরুর দিকে পূর্বের অবস্থানই ধরে রেখেছিলেন কমলা হ্যারিস। তবে শেষ কয়েক সপ্তাহে দেখা গেছে, জরিপে কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যবধান কমে এসেছে।

একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গোটা দেশে কতটা জনপ্রিয়, তা জানার জন্য জাতীয়ভাবে করা জরিপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্ত নির্বাচনে ফলাফল অনুমানের জন্য জাতীয় জরিপই সবচেয়ে ভালো উপায় নয়। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। এ পদ্ধতিতে জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জন্য পৃথক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বরাদ্দ থাকে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট আছে ৫৩৮টি। এর মধ্যে ২৭০টি প্রয়োজন জয়ের জন্য। এক রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন, সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনিই পাবেন।

দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোয় এগিয়ে ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চূড়ান্ত ফল নির্ধারণী দোদুল্যমান সাত রাজ্যে শেষ সময়ের জরিপে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে চমক দেখা গেছে। সোমবার ব্রাজিল-ভিত্তিক এই জরিপ সংস্থা অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপের ফলে বলা হয়েছে, দোদুল্যমান সাত রাজ্যের সবকটিতে কমালা হ্যারিসের চেয়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাদের ব্যবধান একেবারে সামান্য।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ডেমোক্র্যাট দলীয় কমালা হ্যারিসের মাঝে ব্যাপক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য জনমত জরিপেও। অ্যাটলাস ইনটেলের জরিপের ফলে দেখা যায়, দোদুল্যমান রাজ্য অ্যারিজোনায় জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

দোদুল্যমান আরেক রাজ্য নেভাদায় জরিপে অংশ নেওয়া ৫১ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৬ শতাংশ হ্যারিসকে সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া নর্থ ক্যারোলিনায় ট্রাম্প ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং কমালা হ্যারিস পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ জনসমর্থন।

অ্যাটলাস ইনটেলের জনমত জরিপ অনুযায়ী, জর্জিয়া রাজ্যেও এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই রাজ্যে ৫০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এবং ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ হ্যারিসকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চান বলে জানিয়েছেন। মিশিগানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিসের প্রতি ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।

আর পেনসিলভানিয়ায় ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ ও কমালা হ্যারিস ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ এবং উইসকনসিনে ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হ্যারিস ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।

দেশটির সাত রাজ্যে অ্যাটলাসের পরিচালিত এই জনমত জরিপে গড়ে এগিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনি কমালা হ্যারিসের ৪৭ দশমিক ২ শতাংশের তুলনায় ৪৯ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছেন।

অ্যাটলাস ইনটেল বলেছে, ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও সবচেয়ে নির্ভুল জনমত জরিপ প্রকাশ করেছিল তারা। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যেকটি দোদুল্যমান রাজ্যে করা তাদের জনমত জরিপের ফল সঠিক হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যই প্রতিটা নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে একই দলকে ভোট দিয়ে আসে। আমেরিকান নির্বাচনে রিপাবলিকান দুর্গ বলে পরিচিত এই অঙ্গরাজ্যগুলোকে বলা হয় রেড স্টেট বা লাল রাজ্য। আর ডেমোক্র্যাটদের প্রাধান্য পাওয়া স্টেটগুলোকে বলা হয় ব্লু স্টেট বা নীল রাজ্য।

ফলে এসব রাজ্য নিয়ে প্রার্থীদের খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না বা মনোযোগ দিতে হয় না। কিন্তু হাতে গোনা কিছু অঙ্গরাজ্য আছে যে রাজ্যগুলোর ভোট, প্রার্থীদের কারণে যে কোনও শিবিরে যেতে পারে।

ফলে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীরা নির্দিষ্ট কিছু সুইং স্টেটের দিকে নজর দেন যেখানে ভোট কোন পার্টির পক্ষে যাবে, তা নির্দিষ্ট করে বোঝা যায় না। এগুলোই হল আমেরিকান নির্বাচনের ব্যাটলগ্রাউন্ড বা নির্বাচনী রণক্ষেত্র। এগুলোকেই অনেকে বলে থাকে বেগুনি রাজ্য।

প্রার্থীদের কাছে এসব অঙ্গরাজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। যেগুলোকে বলা হয় ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট বা নির্বাচনী রণক্ষেত্র। আর এই অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটই শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় জয় পরাজয়ের মূল চাবিকাঠি। এই রাজ্যগুলোতেই হয় মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যগুলো ২০১৬ সালে এভাবেই ব্যাটল-গ্রাউন্ড স্টেট হয়ে উঠেছিল। প্রত্যেক নির্বাচনের সময় দেখা গেছে যেসব রাজ্যের ভোট বেশি, প্রার্থীরা সেসব রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারণার পেছনে অনেক বেশি সময় ও অর্থ ব্যয় করে থাকেন। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, ইউএসএ টুডে।