গুলিতে মৃত্যু, আদালতের নির্দেশে ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির লাশ উত্তোলন

- আপডেট সময় : ০৮:২২:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৫৩ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ১১ বছর পর জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির লাশ (হাড়গোড়) তোলা হয়েছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার নতুন বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান, রামপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের করিম উল্লাহ মাঝি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ও চরকাঁকড়া ১নম্বর ওয়ার্ডের কমর উদ্দিন বেপারী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ গুলো উত্তোলন করা হয়।
আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা
উত্তোলন করা সাবেক জামায়াত-শিবিরের কর্মিরা হলেন, উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)। এদের মধ্য বামনী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল, বসুরহাট দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী রায়হান শিবির কর্মি ছিলেন এবং বাবলু পেশায় একজন রং মিস্ত্রি ও জামায়াত কর্মি ছিলেন।
খামারে আগুন, ৮টি গরু দগ্ধ, ১টির মৃত্যু
জানা যায়, নিহতের স্বজনদের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশের পর আজ সকালের দিকে পারিবারিক কবরস্থান থেকে রায়হান ও দুপুর পৌনে ৩টার দিকে সাইফুলের এবং বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বাবলুর মরদেহ তোলা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
কৃষকদল নেতাকে পেটালেন বিএনপি নেতা
বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন, নিহতের স্বজন ১১ বছর পর এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মির মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এর আগে, গত গত ১০ ডিসেম্বর উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামে আরও এক শিবির কর্মির লাশ (হাড়গোড়) তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল হয়। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এই বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমবেত হন। জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে করা বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মি নিহত হন। যাদের মধ্যে তিনজনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চারজনের লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়, তখন মামলাও হয়নি। পরে ৫ আগস্ট পরবর্তী এ ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
পুকুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যু
এ ছাড়া মামলায় আসামি করা হয় কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমা।