ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

ফের করোনা প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা চীনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, স্কুল বন্ধ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০ ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ডেস্ক:

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ফের বিস্তারের আশঙ্কায় চীনের রাজধানীতে স্কুল বন্ধ করে দিয়ে চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো হয়েছে। বেইজিং থেকে কিংবা বেইজিংগামী অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হয়েছে; কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু এলাকা অবরুদ্ধও করে দিয়েছে। খবর: রয়টার্স।

ছয় দিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চীনের রাজধানী শহরের অনেক বাসিন্দার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ওলটপালট হয়ে গেছে; এ হারে কভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকলে অচিরেই পুরো শহরটিকে লকডাউন করে দেওয়া হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

চীনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মঙ্গলবার বেইজিংয়ে ৩১ জনের দেহে ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত করেছেন; এ নিয়ে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে ছয় দিনে শহরটিতে ১৩৭ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হলো। ফেব্রুয়ারির পর চীনের রাজধানীতে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের এমন পুনরাবির্ভাব আর দেখা যায়নি। শহরটির সড়ক ও মহাসড়কগুলো খোলা থাকলেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার থেকে বেইজিংয়ের আশেপাশে এবং রাজধানীতে ঢোকা ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তবে শহরটির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।বেইজিংয়ের দুটি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল সীমিত হওয়ায় অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচল আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ না করা হলেও মানুষজনকে রেলে চড়তে অনুৎসাহিত করতে কর্মকর্তারা বেইজিং থেকে কিংবা বেইজিংগামী ট্রেনের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ১০ দিন আগেই বেইজিং কর্তৃপক্ষ শহরটির সতর্কতা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রা থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় নামিয়ে নিয়েছিল। গত মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ শহরটিতে সতর্কতা ফের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় উত্তীর্ণ করার পর অসংখ্য দূরপাল্লার বাস, গাড়ি ও ট্যাক্সি সার্ভিসও বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে। রাজধানীর ২৭টি এলাকাকে ‘মধ্যম-ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সবার নিবন্ধন ও শরীরের তাপমাত্রা মাপার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের উৎস হিসেবে শনাক্ত হওয়া পাইকারি খাদ্য পণ্যের বিশাল এক বাজারের কাছাকাছি একটি এলাকা চিহ্নিত হয়েছে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে; এখানকার সব বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বেইজিংয়ের সব কিন্ডারগার্টেন ও স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে; কিছু রেস্তোরাঁ, বার ও নাইটক্লাবও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চীনের এ রাজধানী শহর ‘লকডাউনের দ্বারপ্রান্তে’ অবস্থান করছে বলে বাসিন্দাদের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বেইজিংয়ে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শহরটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত জিনফাদি পাইকারি খাদ্যপণ্যের বাজার থেকে ছড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা। এ বাজারটি উহানের সামুদ্রিক খাবারের বাজারের চেয়েও অনেক বড়। ডিসেম্বরে উহানের ওই বাজার থেকেই চীনে ও পরে সমগ্র বিশ্বে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে; প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বেইজিংয়ের বাইরে হেবেই, লিয়াওনিং, সিচুয়ান ও জেঝিয়াং প্রদেশে শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সঙ্গেও জিনফাদির বাজারের সংযোগ পাওয়া গেছে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় হেইলংজিয়াংয়ের মতো বেশ কয়েকটি প্রদেশ বেইজিং থেকে আগতদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো হাব ম্যাকাউয়ের কর্তৃপক্ষ বেইজিং থেকে আগত সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে। পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কায় বেইজিংয়ের অনেক বাসিন্দাই জুনের শেষে ড্রাগনবোট ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে থাকা ছুটিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

ফের করোনা প্রাদুর্ভাবের শঙ্কা চীনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, স্কুল বন্ধ

আপডেট সময় : ১২:২৭:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুন ২০২০

ডেস্ক:

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ফের বিস্তারের আশঙ্কায় চীনের রাজধানীতে স্কুল বন্ধ করে দিয়ে চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো হয়েছে। বেইজিং থেকে কিংবা বেইজিংগামী অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হয়েছে; কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু এলাকা অবরুদ্ধও করে দিয়েছে। খবর: রয়টার্স।

ছয় দিন ধরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চীনের রাজধানী শহরের অনেক বাসিন্দার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ওলটপালট হয়ে গেছে; এ হারে কভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকলে অচিরেই পুরো শহরটিকে লকডাউন করে দেওয়া হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

চীনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মঙ্গলবার বেইজিংয়ে ৩১ জনের দেহে ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত করেছেন; এ নিয়ে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে ছয় দিনে শহরটিতে ১৩৭ জন নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হলো। ফেব্রুয়ারির পর চীনের রাজধানীতে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের এমন পুনরাবির্ভাব আর দেখা যায়নি। শহরটির সড়ক ও মহাসড়কগুলো খোলা থাকলেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার থেকে বেইজিংয়ের আশেপাশে এবং রাজধানীতে ঢোকা ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। তবে শহরটির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি।বেইজিংয়ের দুটি বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল সীমিত হওয়ায় অসংখ্য ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে। ট্রেন চলাচল আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ না করা হলেও মানুষজনকে রেলে চড়তে অনুৎসাহিত করতে কর্মকর্তারা বেইজিং থেকে কিংবা বেইজিংগামী ট্রেনের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ১০ দিন আগেই বেইজিং কর্তৃপক্ষ শহরটির সতর্কতা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রা থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় নামিয়ে নিয়েছিল। গত মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ শহরটিতে সতর্কতা ফের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাত্রায় উত্তীর্ণ করার পর অসংখ্য দূরপাল্লার বাস, গাড়ি ও ট্যাক্সি সার্ভিসও বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছে। রাজধানীর ২৭টি এলাকাকে ‘মধ্যম-ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে; এসব এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে সবার নিবন্ধন ও শরীরের তাপমাত্রা মাপার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাদুর্ভাবের উৎস হিসেবে শনাক্ত হওয়া পাইকারি খাদ্য পণ্যের বিশাল এক বাজারের কাছাকাছি একটি এলাকা চিহ্নিত হয়েছে ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে; এখানকার সব বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বেইজিংয়ের সব কিন্ডারগার্টেন ও স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে; কিছু রেস্তোরাঁ, বার ও নাইটক্লাবও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চীনের এ রাজধানী শহর ‘লকডাউনের দ্বারপ্রান্তে’ অবস্থান করছে বলে বাসিন্দাদের অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বেইজিংয়ে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শহরটির দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত জিনফাদি পাইকারি খাদ্যপণ্যের বাজার থেকে ছড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের ধারণা। এ বাজারটি উহানের সামুদ্রিক খাবারের বাজারের চেয়েও অনেক বড়। ডিসেম্বরে উহানের ওই বাজার থেকেই চীনে ও পরে সমগ্র বিশ্বে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে; প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। বেইজিংয়ের বাইরে হেবেই, লিয়াওনিং, সিচুয়ান ও জেঝিয়াং প্রদেশে শনাক্ত কভিড-১৯ রোগীর সঙ্গেও জিনফাদির বাজারের সংযোগ পাওয়া গেছে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় হেইলংজিয়াংয়ের মতো বেশ কয়েকটি প্রদেশ বেইজিং থেকে আগতদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো হাব ম্যাকাউয়ের কর্তৃপক্ষ বেইজিং থেকে আগত সবাইকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে। পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কায় বেইজিংয়ের অনেক বাসিন্দাই জুনের শেষে ড্রাগনবোট ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে থাকা ছুটিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন।