এনকে বার্তা ডেস্ক::
করোনা পরীক্ষায় ল্যাবের সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না মোট পরীক্ষার সংখ্যা। গেলো কয়েকদিন ধরে ৪২টি ল্যাবে পরীক্ষা চললেও সংখ্যাটা এখনো দশ হাজারে উন্নীত হচ্ছে না। তাই ল্যাবগুলোর সক্ষমতা পুরোটা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকনোলজিস্ট ও ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর সংকটই এর অন্যতম কারণ। তাই সবকিছুর আগে এসব ঘাটতি পূরণের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
দেশে শুরুতে করোনা নমুনা পরীক্ষা হতো কেবল আইইডিসিআর’র ল্যাবে। প্রতিদিন এখানে পরীক্ষা সম্ভব ছিলো অন্তত হাজার খানেক নমুনা। সংক্রমণের ৬৬ দিনের মাথায় এখন পরীক্ষা হচ্ছে দেশের ৪২টি ল্যাবে। তারপরও দিনে দশ হাজার নমুনা পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে না।
দিনে ২শ’ নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা আছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কিন্তু তাদের নমুনা দেয়া হচ্ছে গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি।
জানতে চাইলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ অর্ণব গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমাদের ল্যাবের ক্যাপাসিটি প্রায় প্রতিদিন ২ শ’। কিন্তু সিভিল সার্জন অফিস থেকে নির্ধারিত হয় কতটা নমুনা দিবে তারা। যতটা নমুনা পাঠায় সে অনুযায়ী আমরা পরীক্ষা করি।’
আবার বেসরকারি যে হাসপাতাল গুলোকে পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়েছে তাদেরও রয়েছে বেশি পরীক্ষার সক্ষমতা। কিন্তু তারা কেবল নিজেদের ভর্তি রোগীদেরই পরীক্ষা করতে পারছেন।
ইবনে সিনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, উনারা (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) বলছেন রোগী দেবে কিন্তু এখনো দেয়নি। যেহেতু সরকারি নির্দেশ এটা আমাদের করতে হবে। চেষ্টা করবো আমরা করতে।’
ঢাকার মুগদা মেডিকেল করোনার বিশেষায়িত হাসপাতাল। তারপরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এখানে ৭ মে’র পর থেকে আর কোনো নমুনা পরীক্ষা পরীক্ষা হয়নি। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি তারা রোজ-ই পরীক্ষা করছেন।
মুগদা জেনারেল হাসপাতালের করোনা পরীক্ষা কোর্ডিনেটর মাহবুব কচি জানান, ‘পরীক্ষা হচ্ছে না এটা ঠিক নয়। কারণ প্রতিদিন আমরা ১৮৮টি পরীক্ষা করছি।’
সময়ের সাথে ল্যাব বেড়েছে কিন্তু সেই গতিতে বাড়েনি করোনা পরীক্ষার হার। লোকবল আর সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবকেই কারণ হিসেবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারি হাসপাতাল গুলোতে হচ্ছে বিনামূল্যে পরীক্ষা কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে নেয়া হচ্ছে ফি। ফলে হাসপাতালের সক্ষমতা পুরোপুরি ব্যবহারের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়ক সহকারী সমীর কান্তি সরকার।
প্রতিদিন পনেরো হাজার করোনা শনাক্তের লক্ষ্য পূরণে বাড়ানো হচ্ছে ল্যাবের সংখ্যা কিন্তু বিদ্যমান ল্যাবগুলোর সক্ষমতা পুরোটা ব্যবহার করতে পারলে পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরো ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু ১৪ জনে মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯ জন ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২৮ জনের। দেশের ৪২টি ল্যাবের পরীক্ষায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ২৭৩ জনের। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ২৬৮ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে আট হাজার ৫৭৪টি। পরীক্ষা করা হয়েছে আট হাজার ১১৪টি। মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০৮টি।