নিজেস্ব প্রতিবেদক:
নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় দেড়শ বছর ধরে আবাদ হচ্ছে হোগলা পাতা। দেখতে ধান গাছের মতো মনে হলেও উচ্চতায় সর্বোচ্চ ১২ ফুট হচ্ছে এ পাতাটি। হোগলা থেকে তৈরি হচ্ছে কুটির শিল্পের নানা পণ্য। যা দেশের গন্ডি পার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। নিজ উদ্যোগে এসব পণ্য তৈরি করছে স্থানীয়রা। তবে এ সংক্রামন্ত কোন তথ্য নেই স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের কাছে, পাচ্ছে না কোন সহযোগিতা।
নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল চরমটুয়া, আন্ডারচর, পূর্ব চরমটুয়া, কালাদরাফ ও কাদিরহানিফ ইউনিয়নের অন্তত অর্ধশত গ্রামের দেড় হাজার একর জমিতে আবাদ হচ্ছে হোগলা পাতার। দেখতে ধান পাতার মতো মনে হলেও এর উচ্চতা সর্বনি¤œ ৫ এবং সর্বোচ্চ ১২ ফুট পর্যন্ত হয়। প্রায় দেড়শ বছর ধরে হোগলা আবাদ হচ্ছে এ অঞ্চলের জমিতে। নির্দিষ্ট সময়ে জমি থেকে কাঁচা পাতা কেটে তা শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে দড়ি ও চাটাইসহ নানা সামগ্রি। আর এসব তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছে অন্তত ২০ হাজার পরিবারের লাখো নারী, শিশু ও পুরুষ। বছর জুড়ে হাতে তৈরি হোগলার চাটায় ও দড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে তারা। স্থানীয়রা বলছেন, শুধু পন্য উৎপাদন নয়, হোগলা গাছের হোগল ফলও ভালো মূল্যে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। এ হোগল ফলের পাউডার পায়েস, সুপ ও শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
হোগলর পাতার তৈরি দড়ি ও চাটায় স্থানীয় বাজার থেকে পাইকারদের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। সেখানে হোগলার দড়ি থেকে তৈরি হচ্ছে সোফা, টুকরি, ঝুড়িসহ কুটিরশিল্পের বিভিন্ন পণ্য। যা রপ্তানিকারকদের মাধ্যমে দেশ ছাড়িয়ে যাচ্ছে কানাডা, চিন, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। পাইকারদের মতে, শুধু গ্রাম থেকেই বছরে অর্ধশত কোটি টাকার পন্য যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
অথচ, এমন কর্মযজ্ঞের কিছুই জানা নেই স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের। ফলে প্রনোদনাহ সরকারি নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তরা। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, খোঁজ নিয়ে তাদের ভবিষ্যতে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
হোগলা আবাদকারী, চাটাই ও দড়ি তৈরিকারীদেরকে কুটির শিল্পের আওতায় এনে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দিলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার আরও উন্নত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।