ঢাকা ০২:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::

বেগমগঞ্জে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত, আলোচনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুন

বেগমগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৬৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন। ৫ আগস্টের আগে এ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা চালিয়েছেন নানামুখী অপকর্ম। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ এ ছাত্রলীগ নেতা আত্মগোপনে চলে যান। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার চৌমুহনী বাজার থেকে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

গরুর খামারে পেট্রোল ঢেলে আগুন

বেগমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীন মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৪ আগস্ট বিকেলে দুস্কৃতিকারীদের সাথে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মামুন তার ছাত্রলীগের কর্মিরাসহ গত ৪আগস্ট বিকেলে দেশীয় তৈরী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিল নিয়ে উপজেলার আলীপুর রোডে ঢুকে। এরপর পুলিশ সার্কেল অফিসের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সিসিটিভি মনিটর, কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ভাংচুর করে অফিস কক্ষের ভিতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক সামগ্রী, এয়ারকন্ডিশন, আইপিএস, কালার টেলিভিশন ও পানির মটরসহ বিভিন্ন মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল গ্রেপ্তার

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ একটানা ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে যায় বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুনের হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের মিছিলে যেতে বাধ্য করতেন মামুন। তার কথামতো মিছিলে না গেলে মারধরের শিকার হতে হতো শিক্ষার্থীরা। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। চৌমুহনী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সাল ও শিহাব বাহিনীর প্রধান শিহাবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মামুন। এর সুবাদে ক‍্যাম্পাসে তার ছিল সীমাহীন ক্ষমতা।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর বিক্রিতে বাধা..

জানা যায়, চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মন্জুরুল হককে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে এক শিক্ষার্থীর স্থানান্তর ফরমে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে মামুন ওই অধ্যক্ষকে ধাওয়া করে লাঞ্ছিত করে। পরে চৌমুহনী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সালের নেতৃত্বে বিষয়টি মিটমাট করা হয়। তখন ভুক্তভোগী কলেজ অধ্যক্ষ ভয়ে মামলা করতে পারেনি।

নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী মসজিদ উদ্বোধন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মাদক কারবার, সেবনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার নাম ও বাবার নাম মিলে এ রকম বিভিন্ন থানায় তার নামে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। মামুন গ্রেপ্তার হলে একেক সময় একেক ঠিকানা ও বয়স ব্যবহার করত। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে এনিয়ে পুলিশ অন্ধকারে রয়েছে।

ভিডিও পেতে ক্লিক করুন……..

অভিযুক্ত চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন জেলে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মন্জুরুল হক হেনেস্তা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপ্রচন্দের কাউকে নিয়ে কথা বলতে আমার রুচিতে বাধে।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীন মোহাম্মদ বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুন ও তার পিতার নাম মিল আছে এ রকম বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলা গুলোর ঠিকানা মিল নেই। এখন পর্যন্ত মামুনের বিরুদ্ধে পুলিশ সার্কেল অফিসের হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনায় একটি মামলা থাকার তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে। ওই মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য মামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

বেগমগঞ্জে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত, আলোচনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুন

আপডেট সময় : ০৭:৫৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন। ৫ আগস্টের আগে এ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা চালিয়েছেন নানামুখী অপকর্ম। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নিষিদ্ধ এ ছাত্রলীগ নেতা আত্মগোপনে চলে যান। গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার চৌমুহনী বাজার থেকে বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

গরুর খামারে পেট্রোল ঢেলে আগুন

বেগমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীন মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ৪ আগস্ট বিকেলে দুস্কৃতিকারীদের সাথে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মামুন তার ছাত্রলীগের কর্মিরাসহ গত ৪আগস্ট বিকেলে দেশীয় তৈরী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিল নিয়ে উপজেলার আলীপুর রোডে ঢুকে। এরপর পুলিশ সার্কেল অফিসের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সিসিটিভি মনিটর, কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ভাংচুর করে অফিস কক্ষের ভিতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে কম্পিউটার, ইলেকট্রিক সামগ্রী, এয়ারকন্ডিশন, আইপিএস, কালার টেলিভিশন ও পানির মটরসহ বিভিন্ন মূল্যবান আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

সাবেক চেয়ারম্যান মোজাম্মেল গ্রেপ্তার

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ একটানা ক্ষমতায় থাকাবস্থায় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে যায় বেগমগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুনের হয়রানিতে অতিষ্ঠ ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের মিছিলে যেতে বাধ্য করতেন মামুন। তার কথামতো মিছিলে না গেলে মারধরের শিকার হতে হতো শিক্ষার্থীরা। তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে ছিলেন এক আতঙ্কের নাম। চৌমুহনী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সাল ও শিহাব বাহিনীর প্রধান শিহাবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মামুন। এর সুবাদে ক‍্যাম্পাসে তার ছিল সীমাহীন ক্ষমতা।

আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ঘর বিক্রিতে বাধা..

জানা যায়, চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মন্জুরুল হককে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে এক শিক্ষার্থীর স্থানান্তর ফরমে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে মামুন ওই অধ্যক্ষকে ধাওয়া করে লাঞ্ছিত করে। পরে চৌমুহনী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আক্তার হোসেন ফয়সালের নেতৃত্বে বিষয়টি মিটমাট করা হয়। তখন ভুক্তভোগী কলেজ অধ্যক্ষ ভয়ে মামলা করতে পারেনি।

নান্দনিক স্থাপত্যশৈলী মসজিদ উদ্বোধন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মাদক কারবার, সেবনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার নাম ও বাবার নাম মিলে এ রকম বিভিন্ন থানায় তার নামে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। মামুন গ্রেপ্তার হলে একেক সময় একেক ঠিকানা ও বয়স ব্যবহার করত। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কতটি মামলা রয়েছে এনিয়ে পুলিশ অন্ধকারে রয়েছে।

ভিডিও পেতে ক্লিক করুন……..

অভিযুক্ত চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন জেলে থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চৌমুহনী ছালেহ আহমদ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মন্জুরুল হক হেনেস্তা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপ্রচন্দের কাউকে নিয়ে কথা বলতে আমার রুচিতে বাধে।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বেগমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীন মোহাম্মদ বলেন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা মামুন ও তার পিতার নাম মিল আছে এ রকম বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলা গুলোর ঠিকানা মিল নেই। এখন পর্যন্ত মামুনের বিরুদ্ধে পুলিশ সার্কেল অফিসের হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনায় একটি মামলা থাকার তথ্য রয়েছে আমাদের কাছে। ওই মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য মামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।