নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মানুষ, সন্ত্রাসী শাকিল বাহিনীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।
বুধবার দুপুরে বাহিনী প্রধান বিচ্চু শাকিলকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও এখনো এলাকায় সক্রিয় রয়েছে তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, গোপালপুর ইউনিয়নের বেতুয়াবাগ গ্রামের লতিফ মাষ্টার বাড়ির মারফত উল্যাহ’র পুত্র শাকিল ওরফে বিচ্ছু শাকিল (২৬) এলাকায় কিছু বখাটে যুবককে সাথে নিয়ে একটি বাহিনী গঠন করে দীর্ঘদিন থেকে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।
এই সন্ত্রাসী বাহিনীর এসব অপকর্মের কেউ প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে নির্যাতন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই বাহিনীর সদস্যরা দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত হয়। শাকিল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করে বেতুয়াবাগ গ্রামের সাবেক মেম্বার খোরশেদ মেম্বারের ছেলে মাইন (২৫), একই গ্রামের সামু ব্যাপারী বাড়ির মৃত খোকন চৌকিদারের পুত্র সাহেদ প্রকাশ ইয়াবা সাহেদ (২১), একই গ্রামের মোশারফ হোসেনের পুত্র শাহাদাত হোসেন (২৮), তিতাহাজরা গ্রামের মৌলভী বাড়ির আবুল বাসারের পুত্র হাসিব (২৪), দেবকালা গ্রামের দুধ মিয়া জমাদার বাড়ির সামু মিয়ার পুত্র রবিন (২২), কোটরা মহব্বত পুর গ্রামের ভান্ডারীর পুত্র বাবু (২৪), তুলাচারা গ্রামের ফাহিম ওরফে লম্বা ফাহিম(২৬), একই গ্রামের মন কাজী বাড়ির মো: সেলিমের পুত্র ফরহাদ(২১)। এরা সবাই কিশোরগ্যাং এর সদস্য। শাকিল ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় ও আদালতে একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়রী রয়েছে।
গত বুধবার পুলিশ গোপালপুর এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেফতার করে জেলা হাজতে পাঠালেও বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় এখনো সক্রিয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও জিডি করা বাদি ও স্বাক্ষীদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে বাহিনীর সদস্যরা। এতে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শাকিল ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে তুলাচারা গ্রামের মসজিদ আলা নতুন কাজি বাড়ির মৃত আবুল হোসেন খোকনের স্ত্রী কাজল আক্তার বাদি হয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ বেগমগঞ্জ মডেল থানায় মামলা নং-৩৪, তাং-১৯-৩-২০২১ইং, কাজল আক্তারের সন্তান মইফুল ইসলাম বাবলু বাদি হয়ে হত্যার হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়রী নং-১০১, তাং-১৫-৪-২০২১ইং, একই বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র জাবেদ হোসেন বাদি হয়ে গত ১৩-৫-২০২১ ইং চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। মহবুল্যাহপুর খানে বাড়ির মৃত আমিন উল্যাহর পুত্র সেকান্তর আলম বাদি হয়ে হামলা, মারধর ও মালামাল ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ নং-৯৩২/২২, তাং-৫-৪-২০২১ ইং, এবং তার ভাই জাহাঙ্গীর আলম ১৩-৪-২০২২ইং তারিখে থানায় হামলার অভিযোগ লিখিত আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন।
শাকিল তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে এলাকায় মোটর সাইকেল ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন এতো দিন তাদের বিরুদ্ধ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন এই বাহিনীর সদস্যরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
উল্লেখিত মামলার মামলা ও অভিযোগের বাদিরাসহ এলাকাবাসী জানায়, শাকিল ও তার বাহিনীর সদস্যদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। বাহিনীর সদস্যরা রাত দিন এলাকায় মোটর সাইকেল নিয়ে মহড়া দেয়। তাদের হাতে আছে অবৈধ আগ্মেয়াস্ত্র। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকে। শাকিল গ্রেফতার হলেও তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় এখনো দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। এলাকার শান্তি প্রতিষ্ঠায় দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর জাহিদুল হক রনির সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, শাকিলের বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। যে কেউ অপরাধ করলেই আইনের আওতায় আনা হবে।