নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মিদের হামলার ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৪৯ নেতাকর্মির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার (১৫জুলাই) বিকেলে ছাত্রলীগ কর্মি সজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০/১২০জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক। তিনি বলেন, তবে এ মামলার কোনো আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতা জানায়, গত ১৪জুন নোয়াখালীতে বিএনপির পদযাত্রা সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন গত বৃহস্পতিবার ১৩জুন বিকেলে গাড়ি বহর নিয়ে সোনাইমুড়ী বাইপাস সড়ক হয়ে নোয়াখালী জেলা শহরে আসছিলেন। যাত্রা পথে সোনাইমুড়ী বাইপাস সড়কের সামনে আসলে উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সভাপতি আরিফ হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা ইশরাকের গাড়িবহরে হামলা চালায়। একপয়ায়ে সেখানে একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ৩ জন ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকে গুরুতর আহত করে। ঘটনার দুই দিন পর উল্টো বিএনপির ১৪৯ জন নেতাকর্মির বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সভাপতি আরিফ হোসেন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, তার নেতৃত্বে কোনো হামলা হয়নি। ইশরাকের গাড়ি বহর থেকে আমাদের দলের নেতাদের নিয়ে অশ্লীল স্লোগান দেওয়া হয়। এরপর স্থানীয় এমপি সহ দলীয় নেতাদের রাস্তার পাশে থাকা ফেস্টুন ভেঙ্গে ফেলে বিএনপির নেতাকর্মিরা। পরে বাইপাস সড়ক এলাকায় আসলে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মিরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মিদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে ৪-৫জন ছাত্রলীগ কর্মি আহত হয়। আহতদের মধ্যে থেকে সজিবুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যা বুলুর ছেলে মোহাম্মদ সানিকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া সোনাইমুড়ী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোতাহার হোসেন মানিক, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রেজায়ে রাব্বি মাহবুব, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল মনসুর সেলিম, সোনাইমুড়ী পৌরসভা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হেলাল উদ্দিন টুটুল, উপজেলা যুবদল সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া, পৌর যুবদল সভাপতি মারুফুর রহমান, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি নাজিম উদ্দীন রনি, সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ সাদ্দাম, পৌর ছাত্রদল সভাপতি আলা উদ্দিন রাজু, সাধারণ সম্পাদক সোহেল উদ্দিন সজিবসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২৯ নেতাকর্মির নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০০/১২০ জনকে আসামি করা হয়।
নির্বাচনের আগে নোয়াখালীতে বিএনপির নেতাকর্মিদের মাঠ ছাড়া করতে সরকার আবার বিএনপির নেতাকর্মিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মন্জুরুল আজিম সুমন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান। তারা অভিযোগ করে বলেন, অবাক লাগে তারা হামলা চালালো এরপর উল্টো আবার মিথ্যা মামলা দিল। আমরা সোনাইমুড়ী ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মিদের সন্ত্রাসী হামলা ও এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দাও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্জিত এ ধরনের হয়রানি মূলক মামলার থেকে বিরত থাকার আহবান জানাই।
বিএনপির নেতাকর্মিদের ওপর হামলার পর মামলা নেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জিয়াউল হক বলেন, বিএনপির নেতাকর্মিরা আমাদের কাছে এমন কোনো অভিযোগ করেনি। যারা অভিযোগ করেছে তাদের মামলা নেওয়া হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।