সাহেদ সাব্বির, ফেনী:
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় এক গৃহবধূকে (১৯) জোরপূর্বক ওড়না দিয়ে বেঁধে পুকর পাড়ে ধর্ষণের অভিযোগে তার নিজ মামাসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর চান্দিয়া এলাকার মো. হারুন (৩৮) ও মো. মাসুম (২৫)। অপর এক আসামি মো. হৃদয় (২০) পলাতক রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই নারী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। কয়েকদিন আগে স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এরপর ওই নারীকে তার স্বামী সোনাগাজী উপজেলায় তার নানা বাড়িতে রেখে যান। বিষয়টি জানতে পেরে গত ২৪ এপ্রিল বিকেলে হারুন বিরোধ মীমাংসা করে দিতে ভাগ্নিকে নিয়ে নানা বাড়ি থেকে কোম্পানীগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। কিন্তু সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় হারুন তার শ্বশুর বাড়িতে ওই নারীকে রেখে দেন। হারুনের শ্বশুর বাড়িতে দুই দিন থাকার পর ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় মাসুম ও হৃদয় নামে দুজন লোক হারুণের শ্বশুর বাড়িতে যান।
এরপর হারুন তার ভাগ্নিকে বলেন, তার স্বামীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে ওই বাড়িতে দিয়ে আসতে তৈরি হতে বলেন। রাত আটটার দিকে ওই নারীকে নিয়ে হারুনসহ তিনজন অটোরিকশায় করে রওনা হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর তারা ওড়না দিয়ে ওই নারীর হাত-পা ও চোখ বেঁধে এবং মুখ চেপে ধরে সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়া এলাকার একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ সময় তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তারা আবার তাকে গাড়িতে করে হারুনের শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে তার জ্ঞান ফিরে আসলে ঘটনাটি কাউকে বললে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেন তারা। গৃহবধূর স্বামী পরদিন সকালে লোকের কাছে জানতে পেরে ওই নারীকে তার মামার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় ১লা মে (শুক্রবার) দুপুরে গৃহবধূ নিজে বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় নিজ মামাসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলার পর পরই তৎপর সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ। রাতেই অভিযান চালিয়ে মামা সহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতিত গৃহবধূর পরিবার ও স্থানীয়রা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত মামা হারুন ও মাসুমকে রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে। অপর আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।