ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে হাতিয়া উপকূলবাসী

Avatar
newsdesk2
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৪ জুন, ২০২০

মো. শামীমুজ্জামান শামীম, হাতিয়াঃ

ঝড়-জলোচ্ছ্বাস উপকূলবাসীর নিত্যসঙ্গী। এর সঙ্গেই সংগ্রাম করা টিকে থাকতে হয় তাদের। নতুন করে ঘূর্ণিঝড় আম্পান এসে তাদের সব কেড়ে নিয়ে গেছে। সর্বশান্ত করে দিয়ে গেছে হাজার হাজার পরিবার। আম্পানের প্রভাবে তারা হারিয়ে ফেলেছে তাদের ঘরবাড়ি, ক্ষেতের ফসল, মাছ, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে প্রচ- বাতাস, ভারী বর্ষণ ও বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার শতাধিক গ্রাম, ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের সহ কয়েক বিঘা ফসলি মাঠ। কঠিন হয়ে উঠেছে তাদের বর্তমান জীবন ব্যবস্থা। সব হারিয়ে আজ নিঃস্ব তারা। আর এই বিধ্বস্ততা থেকে পুনঃরায় ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে নেমেছেন নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার উপকূলবাসীরা। ঘরবাড়ি মেরামত, ফসলের ক্ষেত পরিচর্যাসহ জীবিকার প্রয়োজনে আবারও কর্ম ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

পূর্ব মাইচ্ছরা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মাঈনুদ্দিন জানান, আম্পায়ানের দিন সন্ধ্যায় আমরা পরিবারের সবাই ঘরের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ প্রচন্ড বাতাসে ঘর মটমট করে ভাঙার শব্দ শুনতে পাই। মুহূর্তের মধ্যে স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে বাহিরে বের হয়ে যায়। মুহুর্ত্বে ভেঙে পড়ে ঘরটি। আমি গরিব মানুষ খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। নিজের ঘরটাকে কোনোরকম দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি।

চরচেংগা গ্রামের হাজী বাড়ির আব্দুল মান্নান বলেন, আম্পানের দিন বিকালে আমার ঘর উড়ে দূরে পুকুরে পড়ে যায়। এখন কোন রকম তাবু টাঙ্গিয়ে বসবাস করছি। চেষ্টা করছি পুরাতন জিনিস দিয়ে নতুন করে কোনরকম গড় কাকে দাঁড় করানোর। ওদিকে রোজগারের কোন ব্যবস্থা নেই তাই দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবারের মাঝে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেওয়া ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলার বয়ারচরে ক্ষতিগ্রস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ঘূর্ণিঝড়ে পড়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘরও মেরামত করে দেন সেনা সদস্যরা। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্যাপ্টেন আশরাফুল ও লেফটেন্যান্ট সাখাওয়াত।

এদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ এখনই মেরামত করা না হলে ভবিষ্যতে অধিক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের একটি স্থানে আধা কিলোমিটার, নলচিরা ইউনিয়নের দুটি স্থানে এক কিলোমিটার, চরকিং ইউনিয়নে আধা কিলোমিটার ও তমরুদ্দি ইউনিয়নের ভাঙা বেড়িবাঁধ পূণঃমেরামত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ পুনঃনির্মাণই হচ্ছে হাতিয়া উপজেলার উপকূলবাসীর মৌলিক দাবী।

সোনাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর ইসলাম জানান, আম্পানের আঘাতের সোনাদিয়া ইউনিয়নের একটি বেঁড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার ফলে কয়েকটি গ্রামের জোয়ারের পানি ডুকে প্লাবিত হয়েছে। বেঁড়ি বাঁধটি সংষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষতিক্ষস্থদের প্রাথমিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০