ঢাকা ০৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ধরাছোঁয়ার বাইরে কবিরহাটে গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার আসামিরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০২০ ৩১৬ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রতিবেদকঃ

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা ধানসিঁড়িতে একজন গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গৃহবধূর বাড়ি পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখীতে। এ ঘটনায় ৬ জুন কবিরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। অবশ্য গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মীর্জা হাছান জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

সূত্রে জানা যায়, ৩ জুন বিকালে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলা থেকে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে জমি কিনতে আসেন গৃহবধূ (২০) ও তার স্বামী (২৬)। কাজ শেষ না হওয়ায় ওই আত্মীয়ের বাড়িতে রাতে থেকে যান তারা।রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আবদুস ছাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ছয় থেকে সাতজন ব্যক্তি গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন।এ সময় তারা ঘরে ঢুকে ওই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজ দেখতে চান। কিছু বুঝে ওঠার আগে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ির পার্শ্বে একটি জায়গায় নিয়ে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান সমাজপতিরা। রাত যখন গভীর তখন দম্পতিকে ছেড়ে দিতে তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন আবদুস ছাত্তার ও আবুল কালাম।

পরে ওই গৃহবধূর স্বামী তার খালাতো ভাইকে মোবাইল ফোনে বিষযটি জানালে, তিনি ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে ছাত্তারের হাতে দিয়ে আরও ২৫ হাজার টাকা পরে দেবেন মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন। টাকা নিয়ে ছাত্তার গৃহবধূকে নিরাপত্তা দেবেন বলে তার মেয়ের বাড়িতে নিয়ে যান এবং তার স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিটিয়ে জখম করেন।

নির্যাতিত গৃহবধূ অভিযোগ করেন, ছাত্তার রাতে তার মেয়ের বাড়ি থেকে গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার নামে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় পাঁচ থেকে ছয়জন লোকের হাতে ছেড়ে দেন। এ সময় গৃহবধূ তাদের কাছ থেকে বাঁচতে ছাত্তারকে বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি। পরে তারা রাস্তার পার্শ্বে একটি কলাবাগানে নিয়ে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যান।

গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় ‘যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্ক’ নোয়াখালীর আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, যুগ্ম-আহ্বায়ক এবিএম আবদুল আলীমসহ সব নেটওয়ার্ক সদস্যরা এক যুক্ত বিবৃতিতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে নেটওয়ার্ক প্রতিনিধিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত আপরাধীদের দ্রুতসময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ধরাছোঁয়ার বাইরে কবিরহাটে গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার আসামিরা

আপডেট সময় : ০৯:৩৬:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০২০

প্রতিবেদকঃ

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা ধানসিঁড়িতে একজন গৃহবধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। গৃহবধূর বাড়ি পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখীতে। এ ঘটনায় ৬ জুন কবিরহাট থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। অবশ্য গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ এ পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মীর্জা হাছান জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

সূত্রে জানা যায়, ৩ জুন বিকালে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলা থেকে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে জমি কিনতে আসেন গৃহবধূ (২০) ও তার স্বামী (২৬)। কাজ শেষ না হওয়ায় ওই আত্মীয়ের বাড়িতে রাতে থেকে যান তারা।রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় সমাজ কমিটির সভাপতি আবদুস ছাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালামের নেতৃত্বে ছয় থেকে সাতজন ব্যক্তি গৃহবধূর আত্মীয়ের বাড়িতে আসেন।এ সময় তারা ঘরে ঢুকে ওই দম্পতির মধ্যে সম্পর্ক অবৈধ বলে তাদের বিয়ের কাগজ দেখতে চান। কিছু বুঝে ওঠার আগে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আটক করে বাড়ির পার্শ্বে একটি জায়গায় নিয়ে সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যান সমাজপতিরা। রাত যখন গভীর তখন দম্পতিকে ছেড়ে দিতে তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন আবদুস ছাত্তার ও আবুল কালাম।

পরে ওই গৃহবধূর স্বামী তার খালাতো ভাইকে মোবাইল ফোনে বিষযটি জানালে, তিনি ৩৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ হিসেবে ছাত্তারের হাতে দিয়ে আরও ২৫ হাজার টাকা পরে দেবেন মর্মে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন। টাকা নিয়ে ছাত্তার গৃহবধূকে নিরাপত্তা দেবেন বলে তার মেয়ের বাড়িতে নিয়ে যান এবং তার স্বামী ও খালাতো ভাইকে পিটিয়ে জখম করেন।

নির্যাতিত গৃহবধূ অভিযোগ করেন, ছাত্তার রাতে তার মেয়ের বাড়ি থেকে গৃহবধূকে তার স্বামীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার নামে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় পাঁচ থেকে ছয়জন লোকের হাতে ছেড়ে দেন। এ সময় গৃহবধূ তাদের কাছ থেকে বাঁচতে ছাত্তারকে বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি। পরে তারা রাস্তার পার্শ্বে একটি কলাবাগানে নিয়ে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যান।

গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় ‘যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্ক’ নোয়াখালীর আহ্বায়ক মো. আবুল কাসেম, যুগ্ম-আহ্বায়ক এবিএম আবদুল আলীমসহ সব নেটওয়ার্ক সদস্যরা এক যুক্ত বিবৃতিতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে নেটওয়ার্ক প্রতিনিধিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত আপরাধীদের দ্রুতসময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।