কবির ভাষায় বলতে হয় ‘ ফাগুন আমায় বিভোর করে, হারায় নিজেকে। শূন্য হিয়ার আড়ালে তবু হাসি জড়াই মুখে, আক্ষেপ আমি এড়াতে নারি; দুপুর বিষন্ন। ফাগুন মানেই সুখ শুধু নয়- নির্জীব অপরাহ্ন। বাঙ্গালি ও বাংলা ভাষাবাসীদের আজ দুটো উৎসব। পহেলা ফাল্গুল ও ভালবাসা দিবস। ফাল্গুনের প্রথম দিনকে বাংলাদেশে পহেলা ফাল্গুন ও বসন্ত বরণ উৎসব হিসেবে উদযাপন করা হয়।
বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। তাই তো প্রকৃতি নিজের রূপে সাজে। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে পরিবর্তন আনায় পহেলা ফাল্গুন ও ভালবাসা দিবস একদিনেই উদযাপন করছে উৎসবপ্রিয় বাঙালি। তীব্র শীতের কঠিন সময় পার করে প্রকৃতি যখন ডানা মেলে সেই আয়োজনকে বিভিন্ন দেশেই বরণ করা হয়। আমরা রঙিন পোশাকে বসন্তবরণ করি। সাধারণত বাসন্তী, হলুদ, লাল পোশাক পরে এদিন উৎসব আয়োজন হয়। পাশের দেশ ভারতে সাদা পোশাকে বসন্ত বরণ হয়।
বসন্তের আগমন বার্তা ১৯৫২ সালের সেই ফাল্গুন মনে করিয়ে দেয় যেদিন ‘পিচঢালা রাজপথে লাল ফুল হয়ে’ ভাষা শহীদেরা নিহত হয়েছিলেন শাসকের গুলিতে। বসন্তেই বাঙালি মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পথে নেমেছিল। বসন্ত মনে করিয়ে আশির দশকের স্বৈরাচার প্রতিরোধ আন্দোলনে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের রক্তের কথা।
১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। প্রকৃতিতে বসন্ত আর ভালোবাসা যেন একে অন্যের পরিপূরক। পহেলা ফাল্গুনে বসন্ত উৎসবের রঙে মেতে ওঠে তরুণ হৃদয়, নতুন করে প্রাণ পায় প্রবীণরা। বসন্তে শুধু প্রকৃতিই নয়, হৃদয়ও রঙিন হয়ে ওঠে। তাই তো বসন্ত আমাদের কাছে ‘প্রেমের ঋতু’।
কোকিলের কুহুতানে জাগা মুখরিত বাংলার বিস্তীর্ণ প্রান্তরে আজ পহেলা ফাগুনের দিনে হবে ভালোবাসার জয়গান। হৃদয় থেকে হৃদয়ের কথাগুলো আজ ভাষা পাবে। প্রেমিক তার প্রেমিকাকে কিংবা প্রেমিকা তার প্রেমিককে আমি তোমাকে ভালোবাসি কথাটি প্রকাশ করবে ‘হ্যাপি ভ্যালেনটাইন্স ডে’ উচ্চারণ করে।