সাহেদ সাব্বির, ফেনী::
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের মোট ৬টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এর ফলে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার প্রায় ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রোববার (১২জুলাই) সন্ধ্যা ৬ টায় মুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার ১.৩২ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
ফুলগাজী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, রোববার (১২জুলাই) সন্ধার দিকে মুহুরী নদীর ফুলগাজী সদর অংশে উত্তর দৌলতপুরের ৩টি স্থানে ও কিসমত ঘনিয়া মোড়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়। এতে ইউনিয়নের ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পুর্ব ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়াসহ অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়া ফুলগাজী বাজারের পশ্চিম অংশে শ্রীপুর এলাকায় রক্ষা বাঁধ গার্ড ওয়ালের উপর দিয়ে মুহুরী নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে ফুলগাজী উপজেলা সদরের মূল সড়কও তলিয়ে গেছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে একইভাবে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের দুটি অংশে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ২টি স্থানে ভেঙে ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন জানান, রোববার সন্ধ্যার দিকে ইউনিয়নের দূর্গাপুরের কালাম মেম্বারের বাড়ির পাশে ও দক্ষিণ শালধর জহির চেয়ারম্যানের (সাবেক) বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুইটি অংশ ভেঙে দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর, দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর ও পাগলীরকুল গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বন্যার পানি নিয়ন্ত্রণে না আসলে ইউনিয়নের উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রাজষপুর উত্তর শালধর, নোয়াপুরসহ আরো কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হতে পারে।
খবর পেয়ে মহুরী নদীর ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আনন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার, ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অজিত দেবনাথ।
স্থানীয়রা অনেকে নদীর বাধ ভাঙ্গার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে কতৃপক্ষকে দায়ী করেছেন। প্রতি বছরই পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় কোটি টাকায় নির্মিত মুহুরী-কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর বাঁধ। এসব বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। প্রতি বছর এমন হলেও স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় স্থানীয়দের দুর্ভোগ সীমাহীন।