রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নৃশংসভাবে খুন হওয়ার ১০ বছর পার হয়েছে। এত বছরেও এই হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়নি। বিগত ১০ বছরে ৮৫ বার সময় নিয়েও আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তারা।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই)। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার হস্তান্তর করা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মামলায় আটজনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, মিন্টু, কামরুল হাসান, বকুল মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদ কারাগারে। পলাশ রুদ্র পাল ও তানভীর রহমান নামে দুজন হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর নয় বছর ১০ মাস গড়ালেও র্যাব এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি আদালতে। পেছাতে পেছাতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ৮৫ বার পেছাতে হয়েছে। এ কারণে মামলার বিচারকাজ কবে শুরু হবে, তা নিয়ে চিন্তিত সাগর-রুনির স্বজনরা।
মামলার বাদী রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বলেন, বোনের হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারেননি আমার মা। ১০ বছর ধরে এ হত্যা মামলার তদন্ত চলছে। আর কত বছর লাগবে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে আল্লাহই ভালো জানেন।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, তদন্ত সংস্থার উচিত মামলাটি দ্রুত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করা।
এদিকে সাগর-রুনি হত্যার এক দশক পূর্ণ হওয়ায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির গ্রহণ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউর দপ্তর সম্পাদক রফিক রাফি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বছর ঘুরে আবারও সেই ১১ ফেব্রুয়ারি। ২০১২ সালে এইদিন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন। এক দশক পেরিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু প্রকৃত হত্যাকারীদের এখনো শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়নি। বিচার প্রক্রিয়াও থমকে আছে। নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে ডিআরইউসহ গোটা সাংবাদিক সমাজ আজও সোচ্চার।