নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদের দ্বিতীয় তলায় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে মসজিদের দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষের দুইটি দরজা, দুইটি জানালা, মেঝে ও উপরের সিলিং এর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত আনুমানিক সোয়া এগারোটার দিকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তবে বিস্ফোরণে কেউ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বিস্ফোরণের ঘটনার খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে ছুটে যান জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এরপর সেখানে যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার রাত আনুমানিক সোয়া এগারোটার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার আলীপুর এলাকায় নির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদের দ্বিতীয় তলায় মোয়াজ্জিন ও খাদেম থাকার কক্ষে আকস্মিক ভয়াবহ এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে কক্ষটির দুইটি দরজা ও দুটি জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জানালার কাছগুলো ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট কা-ে পুরো কক্ষটি বিবর্ণ হয়ে যায়। বিস্ফোরণ স্থলে ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে। বিস্ফোরণ স্থলের উপরে সিলিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বিস্ফোরণের সময় কক্ষটিতে মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের কেউ না থাকায় কোন ঘটনা ঘটেনি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বেগমগঞ্জ মডেল মসজিদের দায়িত্বে থাকা ফিল্ড সুপারভাইজার আব্দুল হালিম বলেন, রাত দশটার দিকে তিনি মুয়াজ্জিন ও খাদেমদের থাকার একটি কাপড়ের ব্যাগ ও দাপ্তরিক কিছু ফাইলপত্র রেখে আসেন। রাত এগারোটার পরে বিস্ফোরণের শব্দ পান। ঘটনার সময় তিনি মসজিদের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে অন্যান্য কর্মচারীদের নিয়ে আসবাবপত্র গোছাচ্ছিলেন। এ সময় মসজিদের আশেপাশের লোকজন আগুন বলে এগিয়ে আসেন। তখন তিনিও দ্রুত মসজিদ থেকে বেরিয়ে যান। পরে আবার এসে দেখেন দ্বিতীয় তলায় খাদেম ও মুয়াজ্জিনদের থাকার কক্ষে আগুন জ্বলছে। দরজা, জানালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাৎক্ষণিক তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন।
আজ সকালে মডেল মসজিদে বিস্ফোরণ স্থল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, দ্বিতীয় তলার ওই কক্ষটির মাঝামাঝি স্থানে আগুনে পোড়া জিনিসপত্রের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিস্ফোরণের ক্ষতিগ্রস্ত জানালার কাচ পড়ে আছে মেঝেতে। বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট অগ্নিকা-ে পুরো কক্ষটি ধোঁয়ায় বিবর্ণ হয়ে গেছে। বিস্ফোরণ স্থলটিকে ইট দিয়ে চার পাশ ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে মডেল মসজিদের একটি কক্ষে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার সময় ওই কক্ষে কেউ ছিল কিনা সে বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞ দলকে খবর পাঠানো হয়েছে। তারা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর প্রতিবেদন দিলে এ বিষয়ে দ্রুত পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।