নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর, ঘোষবাগ ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে (সাংগঠনিক-১) শাখা ও ইউনিয়ন যুবলীগের নবগঠিত আহ্ববায়ক কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ঝাড়ু মিছিল ও সমাবেশ করেছে যুবলীগের নেতা-কর্মিরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার ধাসসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামের চিরিঙ্গা বাজারে, নরোত্তপুর ইউনিয়নের করমবক্স বাজারে, ঘোষবাগ ইউনিয়নের কোম্পানীরহাট বাজারে এ ঝাড়ু মিছিল ও সমাবেশ করে নেতাকর্মিরা।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্বে দেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম খলিল রানা, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্ববায়ক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহসম্পাদক মো. জহিরুল হক জহির, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. ফারুক ও মিঠু। বিক্ষোভ মিছিলে নেতাকর্মিরা কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
এর আগে, একই দিন দুপুর ১টার দিকে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন ও সাংগঠনিক ইউনিয়ন ১ এর আহ্ববায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে আহŸায়ক করা হয় মো. আব্দুর রহিম ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্ববায়ক করা হয়েছে মো. ইয়াসিন সাদ্দামকে। একই সময়ে অপর দুটি ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নরোত্তপুর ইউনিয়নের করমবক্স বাজারে ঝাড়ু মিছিলের নেতত্বে দেন যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম আজাদ ও বাহালুল। অপরদিকে, ঘোষবাগ ইউনিয়নের কোম্পানীরহাট বাজারে ঝাড়ু মিছিলের নেতৃত্ব দেন যুবলীগ নেতা শাহাদাত হোসেন বাবুল বিএসসি, আব্দুল করিম ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম সৌরভ মেম্বারের নেতৃত্বে তাদের অনুসারী নেতাকর্মিরা। এ সময় নেতাকর্মিরা নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবি জানান।
ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহ্ববায়ক ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. জহিরুল হক জহির অভিযোগ করে বলেন, নবগঠিত ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্ববায়ক আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন জামায়াত শিবিরের সাথে ছিল। তাকে আমরা কখনো আওয়ামী লীগ করতে দেখি নাই। হঠাৎ করে সে প্রার্থী হয়েছে। তার আগের কোনো পদপদবী নেই। তাকে কেন যুবলীগের পদ দিয়েছে, কত টাকার বিনিময়ে দিয়েছে তা আমরা জানিনা।
ধানসিঁড়ি, ঘোষবাগ ও নরোত্তমপুর ইউনিয়নে সমাবেশে প্রতিবাদী নেতাকর্মীরা নবগঠিত কমিটিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি জানান। সমাবেশে বক্তারা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা এ পকেট কমিটি দিয়েছে তারা মেরুদন্ডহীন। যাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়েছে তারাও মেরুদন্ডহীন। কিছু দিন পর আমাদের জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওবায়দুল কাদেরের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা মাঠে কাজ করব। কিন্ত আপনারা আমাদেরকে লাগিয়ে দিয়েছেন হোলি খেলায়। আমরা হোলি খেলব আর আপনারা সেখানে বসে বসে পোড়া মোরগ খাবেন। যুবলীগ নিয়ে কান চুলকালে আপনাদেরও চেয়ার থাকবেনা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, কমিটিতে সবাইকে রাখা যায় না। কেউ পদে থাকবে কেউ থাকবে না। আমরা কমিটি গঠনের আগে মতবিনিময় সভা করেছি। যারা আমাদের আহ্ববানে সাড়া দিয়ে মতবিনিময় সভায় আসেনি তাদেরকে কমিটিতে রাখা হয়নি। যারা আমাদের সভায় ছিল তাদেরকে দিয়ে আগামী তিন মাসের জন্য আমরা আহ্ববায়ক কমিটি করে দিয়েছি। যদি তারা বিক্ষোভ করে আমাদের কিছু করার নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু জাফর আবির বলেন, নবগঠিত কমিটির আহ্ববায়ক রহিম আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। সে যুবলীগ করত। তার সাথে জামায়াত শিবিরের কোনো সম্পর্ক ছিলনা।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে কবিরহাট উপজেলা যুবলীগ সভাপতি-সম্পাদক স্বাক্ষরিত উপজেলার ১নং নরোত্তমপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি, ঘোষবাগ ইউনিয়নে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ও ৩নং ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্ববায়ক কমিটি ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগঠিত সাংগঠনিক ১ শাখার ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্ববায়ক কমিটি ঘোষনার করা হয়।