ডেস্ক রিপোর্ট::
স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ১৭টি মহিষ নিয়ে খামার গড়ে তোলেন সিরাজ মিয়া। বর্তমানে তার খামারে মহিষের সংখ্যা রয়েছে ৪৬টি। এসব মহিষ থেকে প্রতিদিন ২০০ লিটার দুধ পান তিনি। দুধ বিক্রি করে মাসে তার প্রায় চার লাখ টাকা আয়। এতে করে খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি তার খামারে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সফল খামারি সিরাজ মিয়া নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ৬নং ধানশালিক ইউনিয়নের বাসিন্দা। ১৭টি বিদেশি মহিষ কিনে ভাই ভাই ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন তিনি।
২০১৭ সালে তার এইচএসএসি পাশ ছেলে নজরুলকে নিয়ে ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন সিরাজ। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তার খামাওে রয়েছে বিভিন্ন জাতের ৩৪টি মা মহিষ এবং ১২টি বাচুর। তার খামারে শ্রমিকের সংখ্যা চারজন । শ্রমিকদের বেতন আর মহিষগুলোর নিয়মিত খাদ্যদ্রব্যের খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো আয় হয় সিরাজের।
ধানশালিক বাজরের এক ব্যবসায়ী মহি উদ্দিন সেলিম বলেন, কৃষিকাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে দেশি মহিষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশি মহিষের দুধ, চাষাবাদ এবং অন্যান্য উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। এ অবস্থায় কয়েকটি বিদেশি মহিষ দিয়ে ফার্ম গড়ে তোলেন সিরাজ। এখন তার খামারে অনেক মহিষ। প্রচুর দুধ পায় সিরাজ। তার মহিষের দুধে আমাদের এলাকার চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকায়ও যায়।
এ বিষয়ে খামারি সিরাজ মিয়া বলেন, সতরটি গাভী মহিষ দিয়ে খামারটি গড়ে তুলি। বর্তমানে খামারে ৪৬টি গাভী রয়েছে। প্রতিদিন ২০০ লিটার দুধ পাই। প্রতি লিটার দুধ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সে হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ১৪ হাজার টাকার দুধ বিক্রি হয়। বলতে পারেন মাসে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকার দুধ বিক্রি হয়। মহিষের খাবার, বিভিন্ন জিনিসপত্র, ওষুধ এবং শ্রমিকদের বেতন দিয়ে মাসে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো লাভ থাকে।
তিনি আরও বলেন, ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন খামারটি বড় করা জরুরি। কারণ ৪৬টি মহিষ এখানে রাখা কষ্টকর। তাই খামারটি বড় করার চেষ্টা চলছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খামারটি আরও সমৃদ্ধ করতে পারতাম।
এ ব্যাপারে সিরাজকে সার্বিক সহযোগিতাকারী তার ছেলে নজরুল জানান, ধানশালিকে বড় একটি মহিষের খামার আছে বলে সবাই আমাদের এই খামারকে চিনেন। আশপাশের এলাকায় এই খামার থেকে দুধ সরবরাহ করা হয়। খামারটি গড়ে আমরা স্বাবলম্বী হয়েছি। এটি যুবসমাজের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য এটি অনুকরণীয়। খামারে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে ব্যবসার উন্নতি করা যায়। শিক্ষিত যুবকরা এসব কাজে এগিয়ে এলে দেশের কৃষি ব্যবস্থাপনা আরও সমৃদ্ধ হবে। কেউ নতুন করে খামার করতে চাইলে আমাদের পক্ষ থেকে খামারিদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।