শেরপুর প্রতিনিধিঃ
শেরপুরে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী কিশোরকে পেটানো মামলায় অবশেষে সেই ৪ কিশোরের জামিন বাতিল করেছে আদালত। ৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার শিশু আদালতের বিচারক মোঃ আখতারুজ্জামান তাদের জামিন বাতিল করে তাদের গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তারা হচ্ছেন, শহরের বটতলা এলাকার গোলাম মাহবুবের ছেলে সিয়াম (১৭), আমিনুল ইসলাম বাবুলের ছেলে শুভ (১৭), বেলাল হোসেনের ছেলে আরমান (১৬) ও সুজন মিয়ার ছেলে সাজেদুল ইসলাম নাসিম (১৫)। এরা সকলেই স্কুল পড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু ওই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জামিন শুনানীকালে বাদীপক্ষ থেকে ঘটনার ভিডিওচিত্র সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। আসামিরা কিশোর হওয়ার পাশাপাশি মামলার অবস্থাও ছিল দুর্বল।
ফলে সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন হয়েছিল। কিন্তু জামিনে যাওয়ার পর বাদীপক্ষকে হুমকির অভিযোগে সদর থানায় দায়ের করা একটি সাধারণ ডায়েরীর প্রেক্ষিতে ওই কিশোরদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন রিপোর্ট দাখিল হয়েছে। এতে তারা জামিনের অপব্যবহার করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। সেইসাথে ঘটনার ভিডিওটিও উপস্থাপন করা হয়। ফলে তাদের জামিন বাতিল করে আপাতত জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পরে দ্রুতই জেল সুপারের মাধ্যমে তাদের গাজীপুর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হুমকির বিষয়ে প্রসিকিউশন মামলায় তাদের জামিন দেওয়া হয়েছে। জামিন বাতিলের বিষয়ে শুনানীকালে রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন জেলা দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট চন্দন কুমার পাল ও জেলা জজ আদালতের জিপি এভোকেট আবুল কাশেম। অন্যদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমকে মুরাদুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।
উল্লেখ্য যে, গত ৩ আগস্ট শহরের পৌরসভার পরিত্যক্ত পুরাতন ভবনে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের কানাশাখোলার বলবাড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে হাফেজ আশিকুর রহমান পাপ্পু (১৫) কে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে ওই ৪ কিশোর। পরদিন ওই মারধরের ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। সেইসাথে ওই ঘটনায় সৃষ্টি হয় তোলপাড়। এরপর ওইদিন পাপ্পুর পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাতেই গ্রেফতার করে ওই ৪ কিশোরকে। ৫ আগস্ট বুধবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে শিশু আদালতের বিচারক মামলা ও আসামিদের বয়স বিবেচনায় ৪ জনকেই জামিন দেন। আর ওই জামিনে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে নানা সমালোচনা।