নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর কবিরহাট ও সদর উপজেলায় পৃথক ঘটনায় এক শিশু এবং এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুটি হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে কবিরহাট থানা ও দুুপুরে সুধারাম থানা পুলিশ পৃথকস্থান থেকে লাশ দু’টি উদ্ধার করেছে। নিহতরা হচ্ছেন, কবিরহাট পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড ঘোষবাগ চুনী হাজী বাড়ীর আবুল কাশেমের ছেলে আশরাফ হোসেন অন্তর (১৩) ও সদর উপজেলার এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নের চর শুল্লকিয়া গ্রামের জহুরুল হকের বাড়ীর আব্দুর রহমান ৩৪ দিন বয়সী মেয়ে জান্নাতুল ফেরদাউস।
নিহত আশরাফ হোসেন অন্তরের চাচা কাউছার আজিম মামুন অভিযোগ করে বলেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার ভাতিজা কবিরহাট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আশরাফ হোসেন অন্তর বাড়ীর পাশের একটি মাঠে ফুটবল খেলা দেখছিল। খেলা চলাকালিন সময় পূর্ব বিরোধের জের ধরে একই এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে নিজাম উদ্দিন আসিফ (১৬) অন্তরের ওপর অর্তকিত হামলা চালায়। এসময় অন্তরকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও তার বাম বুকে কামড় দিয়ে মাংস ছিঁড়ে নেয়। উপস্থিত লোকজন এগিয়ে আসলে আসিফ পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তরকে উদ্ধার করে প্রথমে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালেও তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে একইদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে মারা যায় অন্তর। বৃহস্পতিবার সকালে অন্তরের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছলে তার পরিবার ও সহপাঠিদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে মা কান্নায় ভেঙে পড়ে বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন। তিনি তার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবী করেছেন।
কবিরহাট থানার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাছান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা বকুল আক্তার কুলছুম বাদী হয়ে ৩জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
অপরদিকে সদর উপজেলা এওয়াজবালিয়া ইউনিয়নের চর শুল্লকিয়া থেকে জান্নাতুল ফেরদাউস নামের ৩৪দিন বয়সী একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের পিতা আব্দুর রহমান বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার রাতে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে শিশু জান্নাতুল ফেরদাউসকে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী আকলিমা আক্তার ঘুমিয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম ভাঙার পর শিশুটিকে তাদের বিছানায় দেখতে না পেয়ে খোজাখুঁজি করেন। এক পর্যায়ের সকাল ৬টার দিকে বাড়ীর পূর্ব পাশের একটি ডোবার মধ্যে ভাসমান অবস্থায় জান্নাতের লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন।
সুধারাম মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এমদাদুল হক জানান, খবর পেয়ে দুপুরে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে লাশ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মনে হচ্ছে। নিহত শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।