নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে এক নারী (৩৬) কে সমস্ত শরীর বিবস্ত্র করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন পিপিএম।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে প্রায় ঘন্টা ব্যাপী নির্যাতিতা ওই নারী, তার বাবা ও স্বামীর সাথে বেগমগঞ্জ থানায় কথা বলেন ডিআইজি।
পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ডিআইজি বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখ ও নেক্কারজনক। ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেছেন। ভিকটিমের ভাষ্য অনুযায়ে অভিযুক্ত যুবকরা তাকে বিভিন্নভাবে উত্তক্ত্য করতো। তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেমকে বিষয়টি জানালেও সে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা পুলিশকেও জানায়নি।
ইতোমধ্যে মামলায় এজাহারভুক্ত ৪আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও ভিকটিমের দেওয়া আদালতে ২২ধারা জবানবন্ধীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগের নাম আসায় গতরাতে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলায় কেন দেলোয়ারের নাম আসেনি এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, মামলায় ভিকটিম নয় জনের নাম উল্লেখ করেছেন। এর বাহিরে দেলোয়ার ও ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত ছাড়াও ঘটনার তদন্তে যাদের নাম উঠে আসবে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। অভিযুক্ত অপর আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পরে তিনি ভিকটিমের বাড়ী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন, বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান শেখ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত,গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী তার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ী একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢুকেন। বিষয়টি দেখে পেলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েল জেলায় তথা দেশ ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।