নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আরও দুই আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ড দিয়েছে আদালত। এদিকে ওই ঘটনায় কুমিল্লা, সিলেটের হবিগঞ্জ ও একলাশপুর থেকে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের মধ্যে আবুল কালাম ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি দল বুধবার রাতে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার মারুকা ইউনিয়নের চশুই গ্রামের অভিযান চালিয়ে মামলার ৩নং আসামী আবুল কালামকে, রাতে পুলিশ একলাশপুরে অভিযান চালিয়ে মাঈন উদ্দিন শাহেদকে ও বুধবার সকালে সিলেট জেলার হবিগঞ্জের চুনারঘাট কালেঙ্গা সীমান্তবর্তী এলাকায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ৬নং আসামী সামছু উদ্দিন সুমনকে গ্রেপ্তার করে। তবে সুমনকে এখনো বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আবুল কালামকে ৩মামলায় ২১দিন ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে ২মামলায় ৮দিন রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে হাজির করা হয়।
নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পিপি গুলজার আহমেদ জুয়েল বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আবুল কালাম ও মাঈন উদ্দিন শাহেদকে দুপুরে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২নং আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সোয়েব উদ্দিন খান এর আদালতের হাজির করা হয়। জ্যেষ্ঠ হাকিম শুনানি শেষে ধর্ষণ মামলায় ৪দিন, পর্ণগ্রাফী ও নির্যাতন মামলায় ৬দিনসহ আবুল কালামের মোট ১০দিন এবং মাঈন উদ্দিনকে নির্যাতন মালায় ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে আসামী আব্দুর রহিম ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ মেম্বারের রিমান্ড শেষে ৩নং আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সোয়েব উদ্দিন খান এর আদালতে হাজির করলে হাকিম ১৬৪ধারায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী শেষে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
চতুর্থ দিনেরমত আজও নোয়াখালী বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে জেলা বিএনপি ও অংগসংগঠন, বাম গণতান্ত্রিক জোট নোয়াখালী বিভিন্ন সংগঠন।
প্রসঙ্গত,গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওইনারীর আগের স্বামী তার সাথে দেখা করতে তার বাবার বাড়ী একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে এসে তাদের ঘরে ঢুকেন। বিষয়টি দেখে পেলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন করে। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েল জেলায় তথা দেশ ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়।