নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় যৌতুকের দাবিতে আয়েশা আক্তার প্রিয়া (২০) গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা ২৩ দিনেও গ্রেফতার হয়নি।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্যের কারণে আসামিরা গ্রেফতার এড়িয়ে এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে এবং এরই মধ্যে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছে মামলার প্রধান আসামি। পুলিশের তালবাহনায় মামলার বাদী ও তার পরিবার সঠিক বিচার পাবেন কি-না সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করছেন।
রবিবার (১৫নভেম্বর) সকাল ১০টায় গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে ওই গৃহবধূর মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যসহ স্বজনরা এসব অভিযোগ করেন।
নিহতের পরিবার আরো অভিযোগ করেন, আসামিরা চরঈশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের আত্নীয় হওয়ায় তাদের পুরাতন (মোল্লা বাড়ীতে) সাহাব উদ্দিনের ঘরে আশ্রায় নিয়ে আত্নগোপন করে আছে। আবদুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ আলীর যোগসাজশে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের কারণে আসামিদের গ্রেফতার করছেনা। নিহত গৃহবধূর মা রাহেনা বেগম (নিলুফা) জানান, মামলা হওয়ার পরে পুলিশ আমার সাথে যোগাযোগ করা তো দূরের কথা,বরং আমার স্বামী পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উল্টো আমার স্বামীর সাথে খারাপ আচরণ করেন। মামলার প্রধান আসামি ইদ্রিস পুলিশের যোগসাজশে দেশ ত্যাগ করেছে বলে দাবি করেন। সর্বোপরি এই মামলায় পুলিশ, আসামি ও চেয়ারম্যানের তৃমুখি যোগসাজশে আসামি গ্রেফতার না হওয়াসহ ন্যায় বিচার বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছ ভুক্তভোগী পরিবার।
চরঈশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ জানান, নিহতের পরিবার যে অভিযোগ করেছে তা পুরোপুরি মিথ্যা।
এ বিষয়ে উপপরিদর্শক (এসআই) ইউসুফ আলী অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে দাবি করেন, তিনি হাতিয়া থানায় গত ১মাস আগে এসেছেন। আসামি গ্রেফতারে তিনি জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে বাদী পক্ষের কেউ তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন না বলে তিনি দাবি করেন।
হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের জানান, মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ( ২১ অক্টোবর) হাতিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের গৃহবধূ আয়েশা আক্তার প্রিয়াকে (২০) যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় ও স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ার কারণে হত্যার উদ্দেশ্য পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাসপাতাল) নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় গত (২৪ অক্টোবর) হাতিয়া থানায় নিহতের মা রাহেনা বেগম নিলুফা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী, শশুর, দেবর, ননদসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন কে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ন্যায় বিচারের আশায় ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তকর্তাদের সহায়তা কামনা করেছেন এবং হত্যায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।