নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সুবর্ণচরে বহুপাক্ষিক সংলাপ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

 

নারীর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা প্রতিরোধ-প্রতিবাদ-প্রতিকারের পথানুসন্ধানে এক বহুপাক্ষিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক পক্ষব্যাপী প্রচারণার অংশ হিসেবে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের সহায়তায় পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশন নেটওয়ার্ক-প্রান এবং একশানএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে সোমবার বেলা ১১ টায় সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে এই বহুপাক্ষিক সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সূবর্ণচরে শপথ নেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি-প্রশাসন-পুলিশ ও তরুণরা।

 

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা ধর্ষণ, যৌন হয়রানি সহ নারীর প্রতি সকল ধরণের সহিংসতা নিরসনে তৃণমূল থেকে কাজ করা, দেশের নাগরিক, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, নীতিনির্ধারকগণের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন, নারীদের ঘরে-বাইরে-কর্মস্থলে-পরিবহনে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা, ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারী বিরোধী বক্তব্য বন্ধ করা, যৌন হয়রানি সংক্রান্ত মামলার তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চালু করার দাবি ও প্রস্তবনা জানানো হয়।

 

প্রানের প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খালেদ ইবনে মালেক, সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএস ইবনুল হাসান, একশানএইড বাংলাদেশের ডেপুটি ম্যানেজার তাছলিমা আক্তার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা চৌধুরী।

 

আয়োজকরা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে সারাদেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, গুম, যৌন হয়রানি, যৌতুক, স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু হত্যা- নারীর প্রতি এমন নানান সহিংসতা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। নোয়াখালীতে এই চিত্র আরো ভয়াবহ। শুধুমাত্র অক্টোবর মাসেই নোয়াখালী জেলায় ১৯টি ধর্ষণসহ নারীর প্রতি ৪১ সহিংস ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে জেলায় এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর সারাদেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়। গত দুই বছরে নারীর প্রতি সহিংসতার পুনরাবৃত্তিতে উল্লে¬খযোগ্য সংখ্যকবার সূবর্ণচর উপজেলা আলোচনায় এসেছে।

 

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বক্তারা জানান, নারীর প্রতি সহিংসতা সুবর্ণচরের নারী পুর”ষসহ সকলের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিচারহীনতা, ক্ষমতার নেতিবাচক চর্চা, পুর”ষতান্ত্রিক মনোভাব, পারিবারিক শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনতার অভাব, ইত্যাদি নানামূখী কারণে এই অঞ্চলে নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনয়ত বাড়ছে। সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে সামাজিকভাবে এই ব্যাধিকে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করার কোনো বিকল্প নেই। এর সাথে সাথে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করা, সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ; অপরাধবিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার মাধ্যমে এই সামাজিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। নির্যাতনের শিকার নারী যেন বারংবার মানসিক নিপীড়নের শিকার না হন, নিজের কমিউনিটিতে সামাজিকভাবে তা নিশ্চিত করা এবং আইনগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

 

নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী এই বহুপাক্ষিক সংলাপে সুবর্ণচর উপজেলার আটটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষার্থী, ধর্মীয় প্রতিনিধি, কমিউনিটি নারী, সাংবাদিকসহ দুইশতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০