প্রতিবেদক, হাকিমপুর (হিলি) দিনাজপুর:
দিনাজপুরের হিলি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর। প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ দেশীয় ট্রাক এবং ভারতীয় পণ্যবাহী ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক চলাচল করে এই বন্দরে। কিন্তু যানজটের কারণে চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হচ্ছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে। একমুখী ও সর্কীণ রাস্তা হাওয়ায় প্রতিনিয়তই লেগেই থাকছে যানযট,এতে করে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বন্দরের সাধারণ মানুষ ও ব্যাবসায়ীরা। আর ব্যবহৃত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি। রাস্তা সম্প্রসারণ ও যানযট নিরসন করা গেলে বাড়বে আমদানি-রপ্তানি আর সেই সাথে বাড়বে সরকারের রাজস্ব বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী ও কাষ্টমস কতৃপক্ষ।
দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যবসা-বানিজ্যের বিশাল সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে সরকার ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করে হিলিস্থল বন্দর। ভারতের সাথে যোগাযোগ ভালো হওয়ায় কারনে খুব দ্রুত সময়ে স্থলবন্দরটি দেশে পরিচিত লাভ করে । তবে সম্প্রতি যানযটের কারনে প্রতিনিয়তই আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যবহৃত হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত আমদানি করতে পারছে না এখানকার ব্যবসায়ীরা।বন্দর থেকে সরকার প্রতি বছর বেধেঁ দেওয়া টার্গেট থেকেও বেশি রাজস্ব পেলেও ভোগান্তি কমছে না এখানকার ব্যবসায়ীদের। এর কারন হিসেবে একমূখী ও সর্কীণ রাস্তা,রেল ক্রসিং,সকাল থেকে ১১টা পর্যন্ত বন্দর থেকে ভারত অভ্যন্তরে খালি ট্রাক প্রবেশ। সবমিলিয়ে ১১টার পরে শুরু হয় এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। যেখানে অন্য বন্দর গুলোতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ৯ টা থেকে। আর এসব সমস্যার কারনে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পণ্য ভারত থেকে আমদানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা।
হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শাহিনুর রেজা শাহিন জানান,আমরা হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করে থাকি।তবে একমূখী রাস্তা হওয়ায় প্রতিদিন যানযট লেগে থাকে এতে করে আমরা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি করতে পারি না। আমদানি বেশি করতে পারলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন গতি বাড়বে তেমনি সরকারের রাজস্ব দ্বিগুন হবে।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন জানান,একমূখী ও সর্কীণ রাস্তার কারনে প্রতিদিন যানযট লাগে।এই সমস্যার সমাধান করা গেলে আমদানি-রপ্তানি বাড়বে সেই সাথে বাড়বে সরকারের রাজস্ব।
তিনি আরো জানান,এখানে ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় প্রতিদিন বন্দরে পণ্য নিতে আসা তিন থেকে চারশ বাংলা ট্রাক রাস্তা পাশে দাঁড়িয়ে থাকে আবার ওই একই রাস্তা দিয়ে আমদানি কার্যক্রম ও জনসাধারন চলাচল করে আর এতে করে সৃষ্টি হয় তীব্র যানযটে ফলে ব্যবহৃত হয় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের । আমি ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে অনুরোধ করেন দ্রুত সময়ে হিলি স্থলবন্দরের রাস্তাটি সম্প্রসারণ ও একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করে দিয়ে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ দিনের আশা পূরণ করবে।
হাকিমপুর পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত জানান,একমুখী ও সর্কীণ রাস্তার কারণে বন্দরে প্রায় প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে নির্দিষ্ট একটি ট্রাক টার্মিনালের ব্যাবস্হা করা।এটি আমার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। বাস্তবায়ন হলে বন্দরে যানজটের নিরসন হবে বলে আশাবাদী।
হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, এই বন্দরে যানজটের ব্যাপারটা এটা প্রতিদিনের চিত্র। এখানে প্রতিদিন শত শত বাংলাদেশী ও ভারতীয় ট্রাক চলাচল করলেও নির্দিষ্ট টার্মিনাল না থাকায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা ইতিমধ্যে এখানকার ব্যাবসায়ী ও বন্দর কতৃপক্ষের সাথে টার্মিনাল এর বিষয়ে কথা বলেছি। নির্দিষ্ট ট্রাক টার্মিনাল এর ব্যাবস্হা হলে যানজট অনেক অংশে কমে যাবে।
হিলি কাষ্টমসের উপ-কমিশনার সাইদুল আলম বলেন,হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। প্রতিদিন ভারত থেকে পাথর, ভুট্টা, গম, চাল, বাদাম ও ইসবগুলের ভুষিসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রায় দুইশ থেকে আড়াই’শ ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করে।যা থেকে সরকার প্রতিদিন রাজস্ব পায় প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। তবে গাড়ির সংখ্যা তিন শতাধিক ছাড়িয়ে গেলে প্রতিদিন রাজস্ব আয় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।