নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
আবারও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এরআগে শুক্রবার বিকালে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারিদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় এক সাংবাদিকসহ আহত হন উভয় পক্ষের অর্ধশত নেতাকর্মী।
শুক্রবার রাত ৯টায় নিজের আইডি থেকে লাইভে এসে আহতদের নিজের দলের সমর্থক দাবী করে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচী ঘোষণা করেন মেয়র মির্জা।
জানা গেছে, সংঘর্ষের ঘটনাস্থল থেকে আসার সময় চরকাঁকড়া টেকের বাজার নামক স্থানে বাদল গ্রুপের সদস্য হিসেবে পরিচিত ফখরুল ইসলাম সবুজের নেতৃতে রাস্তায় ব্যারিকেড দিলে আবদুল কাদের মির্জা গাড়ীবহর সহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কয়েক ঘন্টা পর কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ, অতিরিক্ত রিজার্ভ পুলিশ ও র্যাবের কয়েকটি গাড়ী গিয়ে সড়ক অবরোধ তুলে দিয়ে মেয়র কাদের মির্জাকে উদ্ধার করে।
আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ করে বলেন, এমপি একরাম চৌধুরীর বাড়ীতে শুক্রবার দুপুরে বৈঠক শেষে সন্ত্রাসীদের দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এরমধ্যে বাদলের নেতৃত্বে চাপাশিরহাট ও সবুজের নেতৃত্বে টেকের বাজার হামলার ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এ আক্রমন সম্ভব নয়। এজন্য আমি এ ঘটনায় মামলায় নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি ও পরিদর্শক (তদন্ত) কে আসামী করবো। এছাড়া ফেনীর নিজাম হাজারী এমপি, নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরী এমপি, ফেনী পৌরসভার মেয়র স্বপন মিয়াজী, দাগনভুঞা উপজেলার চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপন, নোয়াখালী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন জেহান, সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব বেলায়েত হোসেন, সেতুমন্ত্রীর এপিএস মহিতুল, পিএ আবদুল মতিন ও পিআরও নাছেরকেও এ মামলায় আসামী করা হবে।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল এ ঘটনার জন্য মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও তার সমর্থকদেরকে দায়ী করে তার ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, গত তিন মাস ধরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাবাসী এক ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে আছে। তিনি কখনো হরতাল, কখনো ধর্মঘট আবার কখনো অনশন কর্মসূচী দিয়ে উপজেলাবাসীকে হয়রানি করে আসছেন। উনি প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা, নোয়াখালীর গর্ভ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রীর স্ত্রী, এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে অনবরত কটাক্ষ করে কথা বলে যাচ্ছেন। মির্জা নাকি সত্যবচন করছে, অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। অপরাজনীতিতো উনি করছেন। নিজের ইচ্ছেমত বিভিন্ন কমিটি ভাঙছেন আর নতুন কমিটি দিচ্ছেন। আজ বিকালে আমার বাড়ীতে আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনা সভা চলাকালে মির্জার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আমার বাড়ীতে হামলা চালিয়ে আমার নেতাকর্মীদের গুলি করে আহত করেছে।
প্রসঙ্গত; শুক্রবার বিকালে চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে কাদের মির্জা ও মিজানুর রহমান বাদল সমর্থিত আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীসহ উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ, শর্টগানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। আহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।