প্রতিবেদক নোয়াখালী :
নোয়াখালীর সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নে চাঁদা না দেওয়ায় এক বাকপ্রতিবন্ধীর বসত বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে খামারের মুরগী, ধান-চাল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও আসবাবপত্র লুট করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে বাঁধা দেওয়ায় ৪জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।
ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার উত্তর শুল্লুকিয়া গ্রামে সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের আঘাতে শরীর থেকে ঝরা রক্তে রঞ্জিত হয় ভুক্তভোগী পরিবারের ঈদের আনন্দ।
রোববার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শুল্লুকিয়া গ্রামের ক্ষত-বিক্ষত বসত ভিটায় বাকপ্রতিবন্ধীর ওই পরিবারটি অনেকটা হতাশার চাদরে নিজেদের ডেকে রেখেছেন। এখনো আতংক কাটেনি তাদের।
ভুক্তভোগী বাকপ্রতিবন্দ্বী আবদুল গনি স্পষ্ট কথা বলতে না পারলেও ঈশারা-ঈঙ্গিতে জানান, সেদিন সকালের নারকীয় হামলা ও লুটপাটের ঘটনা। তার ছেলে মো. সোলাইমান বলেন, নিজেদের বসত বাড়িতে মুরগীর খামার, চাষাবাদ আর গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী পালনে কোন রকম সংসারের ঘানি টানছেন বাপ-ছেলে। ঈদের আগ মুহুর্ত্বে স্থানীয় দুলাল, আইয়ুব আলী, রুবেল, ইউসূফ, ইব্রাহিমসহ তাদের সহযোগীরা তাদের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। অসহায় পরিবারটি সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার সকালে উল্লেখিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসত ঘরে কুপিয়ে ভাংচুর করে। পরে তারা মুরগীর খামার থেকে ১২০০ মুরগী, ধানের গোলা থেকে ১৫ মণ ধান, ১২ মণ চাল, ৪টি গাভী-বাচুর, ৩টি ছাগল, ঘরে থাকা ৩ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৯৫ হাজার টাকা, হাঁস-মুরগী, টিউবওয়েলসহ ঘরের আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। এসময় সন্ত্রাসীরা মুরগীর খামার, রান্না ঘর, গোয়াল ঘর, টয়লেট ভাংচুর করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। সন্ত্রাসীদের বাঁধা দিতে গেলে তারা বাকপ্রতিবন্দ্বী আবদুল গনির স্ত্রী সালেহা খাতুনকে কুপিয়ে আহত করে। তাকে উদ্ধার করতে গেলে সন্ত্রাসীরা ছেলে মো. সোলাইমান, পুত্রবধূ রীনা আক্তার, মেয়ে সুবর্ণা আক্তারকে মারধর করে এবং ছেলের বৌ ও মেয়ের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে।
সন্ত্রাসীদের তান্ডব শেষ হলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে আহত সালেহা খাতুন ও ছেলে মো. সোলাইমানকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কালাদরাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, বাকপ্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির সাথে প্রতিপক্ষের জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে খামারের মুরগী ও ঘরের মালামাল লুটের বিষয়টি সত্য নয়।
ঘটনার পরপরই সুধারাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না সুধারাম মডেল থানার ওসি সাহেদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ঈদের আগের দিন খুব ব্যস্ত ছিলাম। বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ ফেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।