নিজেস্ব প্রতিবেদক, নোয়াখালী:
নোয়াখালী জেলার একটি উপজেলার নাম হলো সুবর্ণচর। এই সুবর্ণচর উপজেলাটি অবস্থিত নোয়াখালী জেলার দক্ষিণ অংশে এর পাশে রয়েছে বাংলাদেশের বিক্ষ্যাত যমুনা নদী। এই নদীর ধারে হলো সুন্দর শ্যামল সবুজের মিলন মেলায় ঘেরা ৫৪ টি ভাটিয়ালি গ্রাম, তা নিয়ে গঠিত একটি উপজেলার তার নাম হলো সুবর্ণচর।
এই উপজেলার মোট আয়তন – ৫,৭৬,১৪ বর্গ কিলোমিটার, এখানে মোট জনসংখ্যা – ২,৮৯,০০জন বসবাস করেন । তাদের অধিকাংশ মানুষ বাস করে কৃষি উপর ভিত্তি করে। এছাড়াও রয়েছে মৎস্য খামার, গবাদিপশু খামার, এবং নারকেল ও সুপারি ইত্যাদি।
যাইহোক সুবর্ণচরের এক তরুণ পায়রা প্রেমির গল্প বলতে গিয়ে উপরদিকে সুবর্ণচর নিয়ে একটু লেখা। আজকে কিছু
অর্থনৈতিক হতাশা যুবকের আইডল ও উদ্যামি, কঠোর প্ররিশ্রমির স্বপ্ন দেখা এক তরুণ যুবকের সাফল্যতার গল্প বলব। হ্যাঁ বলছি মরিয়ম পায়রা খামার এর স্বত্বাধিকারীর হেলাল উদ্দিন ভাইয়ের কথা, যিনি কথায় না কাজে বিশ্বাসি।
হেলাল উদ্দিনরা ৫ ভাই। উনি ৫ ভাইদের মধ্যে ২য়। উনার বাবা ছিলেন একজন ব্যবসায়ী, যাকে এক নামে ছিনতেন চরবাটা ও মধ্যম চরবাটার লোকেরা। কারণ তখনকার সময় পর্যাপ্ত মোটরসাইকেল টমটম, নসিমন ও ভারী যানবাহন ছিলনা শুদু ছিল সাইকেল, রিক্সা, ভ্যান, তিনি এগুলোর মেরামত করত। তিনি হালিম মিকার নামে পরিচিত মুখ ছিল । যাইহোক বাবার হাত দরে ব্যবসার হাতেখড়ি শেখা হেলাল উদ্দিন এর।
সেই সময় থেকে বাবার কাজে সহযোগিতা করেছেন। আজ বাবা নেই। শুদু উনার নাম আছে। যাই হোক আমরা মরিয়ম
পায়রা খামার এর স্বত্বাধিকারীরা হেলাল উদ্দিন এর বেড়ে উঠার গল্পোটা শুনবো। হেলাল উদ্দিন ২৫০০ টাকা ও চার জোড়া কবুতর দিয়ে জানুয়ারী ২০১৪ইং তারিখে শখকরে শুরু করেন। শুরুর কিছু দিন যেতে না যেতেই তিন জোড়া কবুতর মারা যায়। মনটা হতাশ, বিব্ররত ও দুর্ভল হয়ে যায়। কিন্তু একেভারে ভেঙে পড়েনি।
আবার নতুন ভাবে দীর্ঘ পরিকল্পনা ও নতুন উদ্যাম নিয়ে শুরু করালো। শুরুর কিছু দিন পর অথ্যাৎ মাঝ সময়ে যদি ও মনটা খারাপ ও হতাশ হয়। পরবর্তী সময়ে আর পিছনের দিকে তাকাতে হয়নি। হাঁটি হাঁটি পা পা করে কর্ম পরিকল্পনা অনুযায়ী দীর্ঘ ৫-৬ বছর মাথায় এসে শখের কবুতর পালন এখন মরিয়ম পায়রা খামার রুপ নেয়। আজ অদ্যবদি পর্যন্ত ২০০-২৫০ জোড়া কবুতর পরিণত হয়। ডিম, বাচ্চা ও মাঝ বয়সী বাচ্চা, বিক্রি করার মতো জোড়া কবুতর সবিই আছে।
একদিনে হয়নি। বর্তমানে উনার ২-৩ লক্ষ্য টাকার কবুতর আছে। আমরা হেলাল উদ্দিনকে পশ্ন করি, আপনার এখানে কত প্রজাতির কবুতর আছে? উত্তরে উনি বলেন, প্রায় ৪০ প্রজাতির কবুতর আছে। যদি কিছু কবুতরের নাম বলতেন, ও হ্যাঁ ১. লাহোরী/ সিরাজীঃ এরা কালো বাদামি, সিল্ভার বর্ণের হয়ে থাকে।
এদের কি ফেন্সি কবুতর বলে থাকে এই কবুতর মূল্য ১৫০০-৩০০ টাকা হয়। ২. ফ্যান্টেল/ লক্ষাঃ এরা লেজের দিকে ময়ুরের মত, এদের কে ময়ুর পঙ্খি হিসাবে ডাকে। এর মূল্য ১০০০-৩০০০ টাকা। ৩. সিলভার কিংঃ এগুলো অনিকটাই দেখতে মুরগীর মতো এর মূল্য ৫-৬০০০ টাকার মতো। ৪. রেছার কবুতরঃ সাধারণত এই কবুতর দিয়ে রেস খেলা হয় এর মূল্য ১০০০-লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়। ৫. লোটন/ নোটন/ রোলিং কবুতরঃ এই কবুতর গুলো শূন্যের উপর ডিগবাজি খায় এদের মূল্য ১-৩০০০টাকা হয়। এছাড়াও জালালি কবুতর, পটার কবুতর, বিউটি হোম কবুতর,
হেল্মেট কবুতর, জকোবিন কবুতর, সার্টিন কবুতর আউল কবুতর ইত্যাদি আছে। এই কবুতর খামারে কখন সময় দিন? হেলাল উদ্দিন বলেন সকালে ৭-৮ পর্যন্ত ও দুপুর ১২- বেলা ৩ পর্যন্ত এবং রাতে ১০- ১২ পর্যন্ত। সাধারণত কি খাবার খেতে দিন? আমি তাদেরকে ধান, গম, ভুট্টা, খেসারী খেতে দিয় ইত্যাদি।
কি কি রোগে আক্রান্ত হয় কবুতরগুলো? ধরুন রানীক্ষেত্র, শিতকালে ঠ্যান্ডা, কলেরা ইত্যাদি। আমরা জানতে পারি প্রতিমাসে সকল খরচ বাদ দিয়ে ৮-১২০০০ টাকা আয় করে। উনার সাফল্য দেখে অনেক যুবক উনার কাছ থেকে কবুতর ক্রয়করে নিয়ে, তাদের ভ্যাগের চাকা পরিবর্তন করতেছে। তাদের মধ্যে হলো, রিয়াজ, আকিবহোসেন, সিরাজ এছাড়াও বর্তমানে হেলাল উদ্দিন এর পাশবর্তী ইউনিয়ন আনসার মিয়ার হাটে, আনসারমিয়া হাট সাইকেল মার্ট বাবার সেই স্মৃতি বিজড়িত পুরাতন ব্যবসা এখন ও পরিচালনা করছে ।
বাবার নামে দোখানের চুক্তি নামা, সাইন বোর্ড, প্যাড, এখনো আছে। যদি ও হেলাল উদ্দিন এর সাথে বিভিন্ন প্রকারের মটরসাইকেল এর পার্টস ও আধুনিক সরাঞ্জাম বিক্রয় করেন। উনার সাফল্যতার গল্প দেখে লাখোকণ্ঠের পক্ষ থেকে দীর্ঘ সাফল্য কামনা করি। ভালো থাকবেন হেলাল উদ্দিন ভাই । আপনি ও ভালো থাবেন এবং সেই সাথে এনকে বার্তা পরিবারকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিশেষ করে বস্তু নিষ্ঠা খবর তুলে আনার জন্য। প্রি পাঠক, কোন কাজকে ছোট মনে করবেন না, আপনি আপনার কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যান দেখবেন সাফল্যতা এক দিন না এক দিন আপনার দর্জায় এসে কড়া নাড়বে, সে দিন হয়তো আমি আপনার গল্পো শুনবো, লিখবো।