মো. মুলতানুর রহমান মান্না , নোয়াখালী :
নোয়াখালীর সুধারাম থানার ধর্মপুরে নিজের কষ্টার্জিত অর্থে খরিদীয়, প্রকৃত মালিকীয় ও ভোগদখলীয় সম্পত্তি দখলের হীনচেষ্টায় একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে একটি নিরীহ পরিবার।
সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেন, একই বাড়ির নিজাম, মোর্শেদা, ইয়াছিন, কামরুল, জসিম, শাহিনুরসহ সংঘবদ্ধরা বাড়ির বিভিন্ন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে যখন তখন ভুক্তভোগী রুবিনা আক্তারের পরিবারকে গালমন্দসহ শাররিক ও মানসিক নির্যাতন করে থাকে। রুবিনা এ বিষয়ে কোন ধরনের বাদ প্রতিবাদ করলেই সংঘবদ্ধরা পুরো পরিবারটিকে নানাভাবে নির্যাতন করে বারবার পার পেয়ে চলছিল।
এলাকাবাসীর ধারণা, সংঘবদ্ধরা রুবিনাদের খরিদীয়, মালিকীয় ও ভোগদখলীয় সম্পত্তি জবরদখলের পাঁয়তারায় মনে করছে যে, এই পরিবারকে একের পর এক অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়ন করলে তারা এ বাড়ি ও বসত ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হবে। এ কারণে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ পরিবারটিকে দীর্ঘদিন ধরেই এশর পর এক অমানবিক ও অমানষিক নির্যাতন করে আসছিল।
রুবিনা অভিযোগ করেন, তার স্বামী সৌদী আরবে থাকেন। তিনি দুই শিশু সন্তান ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়েই বাড়িতে বসত করেন। সংঘবদ্ধরা তার স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই পরিবারের মালিকীয় সম্পত্তি গ্রাস করার চক্রান্তে গত ১৩ জুন, রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ওই পরিবারের বাড়ির মুখের স্টিলের দরজা খুলে নিয়ে যায়।
এ সময় তারা ঘরের চারপাশের টিনের বেড়া কেটে তছনছ করে দেয়। রুবিনা বিষয়টি নিয়ে সংঘবদ্ধদের কাছে জানতে চাইলে তারা আরো ক্ষিপ্ত ও বেপরোয়া হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একপর্যায়ে পুরো পরিবারকে প্রাণেহত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলে।
রুবিনা অভিযোগ করেন, সংঘবদ্ধদলের অন্যতম নিজাম উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে রুবিনার চুলের মুঠি ধরে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেদনাদায়ক জখম করে। এ সময় নিজাম উদ্দিনের নির্দেশে অন্যান্যরা রুবিনার ঘরের স্টিলের আলমিরা ও কাঠের অন্যান্য আসবাবপত্র কেটে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
রুবিনা আরো বলেন, নিজাম ঘরের কাঠের আলমিরা থেকে পরিবারের রক্ষিত নগদ পঁচাত্তর হাজার টাকা, ৪ ভরি ওজনের একজোড়া স্বর্ণের রুলি, ৪টি স্বর্ণের আংটি, ১টি নেকলেছ লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, তারা রুবিনা ও শিশু বাচ্চাদের শো’চিৎকারে এগিয়ে এলেও সংঘব্ধদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধমকির কারণে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
তারা অভিযোগ করেন, খবর পেয়ে জিম্মিদশায় অবরুদ্ধ পরিবারটিকে সুধারাম থানার এস আই মোস্তফা কামালের নেতৃর্ত্বে একদল সঙ্গীয় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আহত রুবিনাকে ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় সুধারাম থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগ বিষয়ে থানার দায়িত্বশীল এসআই নাজিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে এখনো যেতে পারিনি। তবে আমি কিছু খবর নিয়েছি। অনেক আগ থেকে তাদের মধ্যে জমি জমা নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। দেখি, বিকেলে যেতে পারি কিনা। বিস্তারিত তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, রুবিনাকে ইতোপূর্বে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে সংঘবদ্ধ দলের অন্যতম সদস্য ইয়াছিনের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে দায়ের থাকা একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে।
এছাড়া রুবিনার দুই শিশু কন্যাকে অপহরণ করে লাশ গুম করাসহ নানাধরনের হুমকি ধমকির কারণে এ শিশুদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও রুবিনার পুরো পরিবারই শংকা বোধ করছেন।