ঢাকা ০২:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে: নাছির Blind Amjad receives Eid gift from Tarique Zia জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আমজাদ পেলো তারেক জিয়ার ঈদ উপহার ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা School student murdered in trivial incident: Police unravel mystery নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল ছাত্র খুন: রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের ইতালি মার্কেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিখোঁজের ২ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিজ এলাকায় হামলার শিকার এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৫

২০৩০ সালের মধ্যেই বাজারে আসবে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩ ১৬৪৭৯ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এনকে বার্তা আন্তর্জাতিক:

 

হার্টের সমস্যা এবং মরণব্যাধী ক্যান্সার একবার শরীরে বাসা বাঁধলে আর রক্ষা নেই। ধরে নেওয়া হয়-এসব রোগ হলে মরণ নিশ্চিত। তবে মানুষকে আশার আলো দেখানোর চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম মডার্নার একদল গবেষক।

 

এই গবেষকরা ক্যান্সার, হার্টের রোগ এবং অটোইমিউনের কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। যেটি বাঁচাতে পারে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাদের আশা ২০৩০ সালের মধ্যেই তাদের ভ্যাকসিন মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত হবে।

 

এ ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাদের কয়েকজন বলছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এ নিয়ে কাজ করছেন তারা। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন ১২-১৮ মাসে মধ্যে। কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার সময় এই ভ্যাকসিন তৈরির কাজে গতিশীলতা আসে।

 

মডার্নার প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পল বার্টন বলেছেন, তাদের আশা, আগামী ৫ বছরের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিনের মতো ‘সব ধরনের রোগের চিকিৎসা’ মানুষকে তারা দিতে পারবেন।

 

বিশ্বে করোনা ভাইরাসের যতগুলো কার্যকরী ভ্যাকসিন বাজারে এসেছে এরমধ্যে মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। বর্তমানে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

ডাক্তার পল বার্টন বলেছেন, ‘আমাদের কাছে এ ভ্যাকসিন থাকবে এবং এটি খুবই কার্যকরী হবে। ভ্যাকসিনটি কয়েক কোটি মানষের জীবন রক্ষা না করলেও কয়েক লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করবে। আমরা মনে করি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ভ্যাকসিন দিতে পারব আমরা।’

 

এছাড়া তিনি বলেছেন, মাত্র একটি ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই শ্বাসতন্ত্রের একাধিক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে। এরমাধ্যমে দুর্বল মানুষ করোনা, ফ্লু এবং শ্বাসতন্ত্রের সিনসিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে রক্ষা পাবেন। অপরদিকে যেসব বিরল রোগের কোনো ওষুধ এখনো বের হয়নি সেগুলোতে এম-আরএনএ থেরাপি ব্যবহার করা যাবে। এম-আরএনএ থেরাপি শরীরের কোষগুলোকে জানান দেয় কীভাবে প্রোটিন তৈরি করা হয়। যেটি শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচল করে।

 

ডাক্তার বার্টন বলেছেন, ‘আমি মনে করি যেসব রোগের ওষুধ এখনো তৈরি হয়নি, সেসব রোগ সারিয়ে তুলতে আমাদের কাছে এম-আরএনএ ভিত্তিক থেরাপি থাকবে। আমি মনে করি এখন থেকে ১০ বছর পর, আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছাব, যে সময় সত্যিকার অর্থে রোগের জেনেটিক কারণ খুঁজে বের করতে পারব এবং এম-আরএনএ ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেটি সারিয়ে তুলতে পারব।’

 

তবে বর্তমানে যে গতিতে এ কার্যক্রম এগিয়ে চলছে, এটি যদি ধরে রাখতে হয় তাহলে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। যদি পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না পাওয়া যায় তাহলে পুরো বিষয়টিই বৃথা যাবে।

 

কীভাবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করবে?

এম-আরএনএ অণু শরীরে কোষগুলোকে প্রোটিন উৎপাদন করার জন্য নির্দেশ দেয়। সিনথেটিক আকারে এটি শরীরে পুশ করলে রোগ প্রতিরোধে আমাদের যে প্রোটিন প্রয়োজন সেটি উৎপন্ন হয়।

 

একটি এম-আরএনএ ভিত্তিক ক্যান্সার ভ্যাকসিন— শরীরের ভেতর যে ক্যান্সারের কোষগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটিকে ধরে ফেলে ইমিউন সিস্টেমকে সতর্ক করে দেবে। এরপর এটি ক্যান্সারের কোষগুলোর ওপর হামলা চালাবে এবং ধ্বংস করে দেবে। তবে এ সময় শরীরের ভালো কোষগুলোর কোনো ক্ষতি করবে না এটি।

 

এছাড়া এটি ক্যান্সার কোষগুলোর ওপর প্রোটিনের যে খণ্ড থাকে সেগুলো খুঁজে বের করবে, যেগুলো ভালো কোষে থাকে না— এটি ইমিউন সিস্টেমকে সচল করবে এবং এরপর এম-আরএনএ এর টুকরো তৈরি করবে যেটি শরীরকে নির্দেশনা দিবে কীভাবে এ প্রোটিন উৎপন্ন করতে হয়।

প্রথমত, ডাক্তাররা রোগীর ক্যান্সার টিউমারের বায়োপসি করবেন এবং এটি ল্যাবে পাঠাবেন। এরপর ল্যাবে এর জেনেটিক মিউটিশন খুঁজে বের করা হবে, যেটি ভালো কোষে থাকে না।

 

এরপর অ্যালগরিদম খুঁজে বের করবে কোন মিউটিশনটি শরীরে ক্যান্সার বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি এটি খুঁজে বের করবে কোন প্রোটিন ইমিউন সিস্টেমকে সচল করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে। এরপর সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে কার্যকরী এন্টিজেন তৈরি করা হবে এবং বিশেষ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হবে।

 

ডাক্তার বার্টন আরও জানিয়েছেন, আগে তাদের ধারণা ছিল এম-আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধুমাত্র সংক্রমণজনিত রোগগুলোর চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু এটি ক্যান্সার, হার্টের রোগ, অটোইমিউন সমস্যা এবং বিরল রোগের চিকিৎসায়ও দারুণ ভূমিকা রাখে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক

২০৩০ সালের মধ্যেই বাজারে আসবে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ এপ্রিল ২০২৩

এনকে বার্তা আন্তর্জাতিক:

 

হার্টের সমস্যা এবং মরণব্যাধী ক্যান্সার একবার শরীরে বাসা বাঁধলে আর রক্ষা নেই। ধরে নেওয়া হয়-এসব রোগ হলে মরণ নিশ্চিত। তবে মানুষকে আশার আলো দেখানোর চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম মডার্নার একদল গবেষক।

 

এই গবেষকরা ক্যান্সার, হার্টের রোগ এবং অটোইমিউনের কার্যকরী ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন। যেটি বাঁচাতে পারে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ। গবেষকরা জানিয়েছেন, তাদের আশা ২০৩০ সালের মধ্যেই তাদের ভ্যাকসিন মানুষের দেহে প্রয়োগের জন্য প্রস্তুত হবে।

 

এ ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত বেশ ভালো সাফল্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। তাদের কয়েকজন বলছেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এ নিয়ে কাজ করছেন তারা। কিন্তু তারা সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছেন ১২-১৮ মাসে মধ্যে। কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার সময় এই ভ্যাকসিন তৈরির কাজে গতিশীলতা আসে।

 

মডার্নার প্রধান মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পল বার্টন বলেছেন, তাদের আশা, আগামী ৫ বছরের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিনের মতো ‘সব ধরনের রোগের চিকিৎসা’ মানুষকে তারা দিতে পারবেন।

 

বিশ্বে করোনা ভাইরাসের যতগুলো কার্যকরী ভ্যাকসিন বাজারে এসেছে এরমধ্যে মডার্নার তৈরি ভ্যাকসিনটি সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। বর্তমানে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

 

ডাক্তার পল বার্টন বলেছেন, ‘আমাদের কাছে এ ভ্যাকসিন থাকবে এবং এটি খুবই কার্যকরী হবে। ভ্যাকসিনটি কয়েক কোটি মানষের জীবন রক্ষা না করলেও কয়েক লাখ মানুষের জীবন রক্ষা করবে। আমরা মনে করি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ভ্যাকসিন দিতে পারব আমরা।’

 

এছাড়া তিনি বলেছেন, মাত্র একটি ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই শ্বাসতন্ত্রের একাধিক রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা যাবে। এরমাধ্যমে দুর্বল মানুষ করোনা, ফ্লু এবং শ্বাসতন্ত্রের সিনসিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) থেকে রক্ষা পাবেন। অপরদিকে যেসব বিরল রোগের কোনো ওষুধ এখনো বের হয়নি সেগুলোতে এম-আরএনএ থেরাপি ব্যবহার করা যাবে। এম-আরএনএ থেরাপি শরীরের কোষগুলোকে জানান দেয় কীভাবে প্রোটিন তৈরি করা হয়। যেটি শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচল করে।

 

ডাক্তার বার্টন বলেছেন, ‘আমি মনে করি যেসব রোগের ওষুধ এখনো তৈরি হয়নি, সেসব রোগ সারিয়ে তুলতে আমাদের কাছে এম-আরএনএ ভিত্তিক থেরাপি থাকবে। আমি মনে করি এখন থেকে ১০ বছর পর, আমরা এমন একটি অবস্থানে পৌঁছাব, যে সময় সত্যিকার অর্থে রোগের জেনেটিক কারণ খুঁজে বের করতে পারব এবং এম-আরএনএ ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেটি সারিয়ে তুলতে পারব।’

 

তবে বর্তমানে যে গতিতে এ কার্যক্রম এগিয়ে চলছে, এটি যদি ধরে রাখতে হয় তাহলে বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। যদি পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না পাওয়া যায় তাহলে পুরো বিষয়টিই বৃথা যাবে।

 

কীভাবে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন কাজ করবে?

এম-আরএনএ অণু শরীরে কোষগুলোকে প্রোটিন উৎপাদন করার জন্য নির্দেশ দেয়। সিনথেটিক আকারে এটি শরীরে পুশ করলে রোগ প্রতিরোধে আমাদের যে প্রোটিন প্রয়োজন সেটি উৎপন্ন হয়।

 

একটি এম-আরএনএ ভিত্তিক ক্যান্সার ভ্যাকসিন— শরীরের ভেতর যে ক্যান্সারের কোষগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটিকে ধরে ফেলে ইমিউন সিস্টেমকে সতর্ক করে দেবে। এরপর এটি ক্যান্সারের কোষগুলোর ওপর হামলা চালাবে এবং ধ্বংস করে দেবে। তবে এ সময় শরীরের ভালো কোষগুলোর কোনো ক্ষতি করবে না এটি।

 

এছাড়া এটি ক্যান্সার কোষগুলোর ওপর প্রোটিনের যে খণ্ড থাকে সেগুলো খুঁজে বের করবে, যেগুলো ভালো কোষে থাকে না— এটি ইমিউন সিস্টেমকে সচল করবে এবং এরপর এম-আরএনএ এর টুকরো তৈরি করবে যেটি শরীরকে নির্দেশনা দিবে কীভাবে এ প্রোটিন উৎপন্ন করতে হয়।

প্রথমত, ডাক্তাররা রোগীর ক্যান্সার টিউমারের বায়োপসি করবেন এবং এটি ল্যাবে পাঠাবেন। এরপর ল্যাবে এর জেনেটিক মিউটিশন খুঁজে বের করা হবে, যেটি ভালো কোষে থাকে না।

 

এরপর অ্যালগরিদম খুঁজে বের করবে কোন মিউটিশনটি শরীরে ক্যান্সার বৃদ্ধি করে। পাশাপাশি এটি খুঁজে বের করবে কোন প্রোটিন ইমিউন সিস্টেমকে সচল করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে। এরপর সবকিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে সবচেয়ে কার্যকরী এন্টিজেন তৈরি করা হবে এবং বিশেষ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হবে।

 

ডাক্তার বার্টন আরও জানিয়েছেন, আগে তাদের ধারণা ছিল এম-আরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধুমাত্র সংক্রমণজনিত রোগগুলোর চিকিৎসা করা যায়। কিন্তু এটি ক্যান্সার, হার্টের রোগ, অটোইমিউন সমস্যা এবং বিরল রোগের চিকিৎসায়ও দারুণ ভূমিকা রাখে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান