সংবাদ শিরোনাম ::
হাতিয়ায় লক্ষাধিক লোক পানি বন্দি

প্রতিনিধির নাম
- আপডেট সময় : ১০:৪৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০ ৮৪৯ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালীঃ
মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাব, টানা বর্ষন, পূর্ণিমার জোয়ার ও বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপের কারনে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর ফলে দ্বীপাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছে। চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে গবাদি পশু। ভেসে গেছে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের শত শত কাঁচা ঘরবাড়ি ও খামারের মাছ। জরুরী ভিত্তিতে হাতিয়ায় সরকারি ত্রান বিতরনের দাবী করেছেন বন্যাদূর্গত এলাকার মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, শরৎ এর শুরু থেকে (১৫ আগষ্ট) মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় টানা ৬দিন যাবৎ নোয়াখালীতে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে ঝড়ো বাতাসের কারনে জোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা দেশের বৃহত্তম উপজেলার (২ হাজার ৩০০বর্গ কিলোমিটার আয়তন) ১১টি ইউনিয়নের সব কয়টি পানিতে তলিয়ে গেছে। এদের মধ্যে লক্ষাধিক লোক পানি বন্দি হয়ে চরম দুর্দশায় পড়ে অর্ধাহারে, অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তলিয়ে গেছে বসতঘর, ফসলি জমি, গোয়ালঘর, বেড়িবাঁধ ও জনপদ। ভেসে গেছে খামারের লাখ লাখ টাকা মূল্যের মাছ।
হাতিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক চরকিং ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, গত ৫-৬ দিনের টানা বর্ষন ও অমাবস্যার কারনে হাতিয়া উপজেলার লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট উঁচু জোয়ার আসার কারনে নিঝুমদ্বীপ, চরঈশ^র, সুখচর, তমরুদ্দি, নলচিরা, কেরিংচর, হরনী ও ছানন্দি ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ৫-৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ ভেঙে ও উপচে পড়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, তার ইউনিয়নের ৫৭ হাজার লোক ১সপ্তাহ যাবৎ পানিবন্দি রয়েছে। এ ইউনিয়নে কোন বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ না থাকায় জোয়রের পানি অতি সহজেই প্রবেশ করে বসতঘর, রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। আগামী শুকè মৌসুমে নিঝুম দ্বীপে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মানের দাবী জানিয়েছেন তিনি।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রেজাউল করিম বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বর্ষনে উপজেলার সবকয়টি ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করেছে। কোথাও কোথাও বেড়ি বাঁধ ভেঙে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা জিহাদুর হাসান বলেন, জোয়ার ও নদীর ¯্রােতে হাতিয়া উপকূলের কয়েকশ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৪০ মেট্রিকটন জি.আর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাঁন বলেন, টানা বর্ষন ও অস্বাভাবিক জোয়ারের কারনে হাতিয়া, সুবর্নচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নি¤œাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি শনিবার সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর ও হাতিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলগুলো পরিদর্শন করেছেন। বর্ন্যার্তদের জন্য ৪০ মেট্রিকটন ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।