সুবর্ণচরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগকে পূর্ণবাসনের অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
- আপডেট সময় : ১০:২৮:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
নোয়াখালী সুবর্ণচরে আওয়ামিলীগের সহযোগী সংগঠন সম্প্রতি নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সুবর্নচর শাখার একাধিক নেতাকে আশ্রয় প্রশয় এবং যুবদলে স্থান দেয়া সহ পূর্ণবাসনের অভিযোগ উঠেছে সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রুর বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২৪ তারিখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ক্ষাক্ষরিত দেশ ব্যাপী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দিয়েছেন যারা অতিতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ তাদের দোসরদের সাথে যে সকল বিএনপি, যুবদল ছাত্রদল নেতারা কাজ করেছেন, সাপোর্ট সমর্থন দিয়েছেন, সেসকল নেতা যেন আগামিতে কোন পদ পদবীতে না আসে। কিন্তু দুঃখ জনক বিষয় হলেও সত্যি সুবর্ণচরে বেশ কিছু পদ পদবী ধারী নেতারা অতিতে আওয়ামীলীগের সাথে আঁতাত করে বিএনপিও ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মিথ্যা মামলা-হামলা করেছে এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমাণ্য করে প্রকাশ্য আওয়ামীলীগ নেতাকর্মিদের পক্ষ নিয়ে ভোটের প্রচার-প্রচারনা ও সমর্থন দিয়েছেন। এমনকি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর এখনো অনেক নেতা আওয়ামীলীগ সহ তার অঙ্গসংগঠনের নেতাদের আশ্রয়, প্রশয়সহ নব্য বিএনপি বলে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন। যা দল তথা দেশের জন্য সমাজের হুমকি। তেমনই অন্যতম একজন হলো কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু। তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে সুবর্ণচর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আব্দুল্যাহ আল মামুন জাবেদের পক্ষ নিয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তালা প্রতিকে ভোটের ব্যাপক প্রচার প্রচারনা করেন যা দলীয় নেতৃবৃন্দদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়। এবং সে ঘটনায় দল থেকে তাকে শোকজও করা হয়।
৫ আগস্টের পর এ যুবদল নেতা একাধিক আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে সু সুসংগঠিত করতে প্রকাশ্য এবং গোপনে কাজ করে যাচ্ছেন যা দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখানোর মত।
সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু গত ১৫ ডিসেম্বর চর মহি উদ্দিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম রাব্ব্লু, চরজব্বর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মোহাম্মদ রুবেল, চর জুবিলী ছাত্রলীগ নেতা সানা উল্যাহ, চর জব্বর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক রুবেলসহ ছাত্রলীগ নেতার্কীদেরকে সাথে নিয়ে সুবর্ণচর উপজেলার সদ্য যোগদানকৃত নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকির সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন এবং সোস্যাল মিডিয়ায় সেই সাক্ষাৎকারের কিছু ছবিও ভাইরাল হয়। যা অত্যান্ত দুঃখ জনক এবং দলের সাথে বেঈমানীর সামিল।
অভিযোগ রয়েছে বিগত ২০০৯ সালে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে এডভোকেট জাকারিয়াকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত করায়, কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু ছায়েদল হক ভূঁইয়ার পক্ষ নিয়ে নোয়াখালী ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ মোঃ শাহজাহান এর গাড়ী বহরে হামলা করার এবং ২০১৭ সালে ঈদ উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মিদের নিয়ে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের আখতার মিয়ারহাট প্রোগ্রাম শেষে হারিছ চৌধুরী বাজার দিয়ে গাড়ী বহর যাবার সময় কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু’র ইন্ধনে সুবর্ণচর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আব্দুল্যাহ আল মামুন জাবেদ, চর জুবলীর সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল্ল্যাহ খসরুসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতারা পুনরায় আলহাজ মোঃ শাহজাহান এর গাড়ী বহরে হামলা করে। সে হামলায় একাধিক নেতাকর্মি আহত হয়। অথচ অথচ ওই হামলায় উল্টো বিএনপি নেতাকর্মিদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য গত উপজেলা নির্বাচনে যুবদল নেতা আতিক উল্যাহ অশ্রু ছাত্রলীগ নেতা জাবেদের পক্ষে তালা মার্কায় ভোট করায় এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।
তার আপন মামা নুর ইসলাম মানিক মিয়া চরজব্বর ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি। মানিকের বিরুদ্ধেও চরজব্বর, চর মহিউদ্দিন ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রবাব খাটিয়ে বহু জায়গা জমি দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এবং এসব ঘটনায় কোর্টে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে। কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রুর আত্বীয় স্বজনদেও মধ্যে সিংহ ভাগই রয়েছে আওয়ামীলীগ রাজনিতীর সাথে জড়িত।
কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু আওয়ামিলীগের আমলে তাদের সাথে আঁতাত করে গড়েছেন বিশাল সম্পদের পাহাড়, নতুন বাড়ী, খামারসহ একাধিক ব্যবসা গড়ে তুলেছেন এ নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর চর জুবিলী পাংখার বাজার ভূমিহীন কামাল উদ্দিনের জায়গা দখল করে নেন এ নেতা। যুবদলের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজী, হুমকি ধমকিসহ আওয়ামিলীগের লোকজন নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মিদের ওপর নির্যাতনের কথাও উঠে এসেছে তার বিরুদ্ধে। আওয়ামিলীগ সরকারের ১৭ বছরে আওয়ামীলীগের লোকজের নাম ভাঙ্গিয়ে বিএনপির বহু নেতাকে মিথ্যা মামলায়ও ইন্ধন দেন কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী আতিক উল্যাহ অশ্রু মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি দলের দু:সময়ে রাজনীতি করেছেন, তার বিরুদ্ধে এখনো আওয়ামীলীগের দেয়া একাধিক মামলা রয়েছে। মামলা গুলোতে কারাভোগও করছেন। দলীয় কোন্দলের কারণে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ উঠেছে। তবে এ নেতা জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করার সময় দলীয় পরিচয় নয় বরং একটি সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে দেখা করেন। তবে সেখানে কোন ছাত্রলীগের পদ-পদবীধারি লোক ছিলনা। তার বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এসব কিছু তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ৫আগষ্টের পর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মকান্ডে বাঁধা দেয়ায় এবং হারিচ চৌধুরী বাজারে আওয়ামীলীগের দোসরদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকায় এক শ্রেণির সুবিধাবাদিরা এসব মিথ্যাচার করছে।