ডেস্ক রিপোর্ট::
করোনা মহামারিতে ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়নে দুই হাজার কোটি টাকার তহবিলের জোগান দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার আর্থিক খাতের সংগঠনের অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) নেতারা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকে মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে তারল্য সংকট, ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়নে অর্থ প্রাপ্তি সহজ, এনবিএফআইয়ে রাখা ব্যাংকের আমানত তুলে না নেওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের বিষয়ে কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এনবিএফআইগুলো গভর্নরের কাছে বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তীব্র তারল্য সংকট। এজন্য সহজ শর্তে তারল্য জোগানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতের বড় উৎস হচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার কারণে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণ কিস্তি আদায়ে চাপ না দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কিস্তি আদায়েও ভাটা পড়েছে।
এই সময়ে ব্যাংকগুলো যেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আমানত তুলে না নেয়। এ বিষয়ে গভর্নরের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকও বিষয়টিতে ঐক্যমত পোষণ করে।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, খুব শিগগির এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। বৈঠকের বিষয়ে বিএলএফসিএ চেয়ারম্যান ও আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমানত তুলে না নিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন গভর্নর।
এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি এবং সেবা খাতের জন্য বরাদ্দ ঋণ প্যাকেজের দুই হাজার কোটি টাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিতরণ হওয়ার বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে।
জানা গেছে, বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়নে শতভাগ অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেওয়ার। বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমে ঋণ বিতরণ করবে প্রতিষ্ঠান। বিতরণকৃত ঋণের ৫০ শতাংশ তহবিল সরবরাহ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তারল্য সংকট থাকায় ঋণের পুরো অর্থই প্রথমে চায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক গ্যারান্টি চাওয়া হয়। গ্যারান্টি পেলে পুরো অর্থ প্রথমেই দেওয়ার বিষয়ে কোনো আপত্তি থাকবে না বাংলাদেশ ব্যাংকের। এছাড়া সহজ শর্তে ও সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল জোগানের দাবি করা হয়। প্রয়োজনে রেপোর মাধ্যমেও হতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, লিখিত প্রস্তাব দিলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রেরণ করা হবে। সূত্র জানিয়েছে, তহবিল পেতে লিখিত আকারে প্রস্তাব দেবে বিএলএফসিএ।