ঢাকা ০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মালিকানা ছিনতাই করেও এনসিপি সংগঠন হিসেবে ব্যর্থ হয়েছে: নাছির Blind Amjad receives Eid gift from Tarique Zia জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আমজাদ পেলো তারেক জিয়ার ঈদ উপহার ভাড়াটিয়ার দোকানে তালা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা School student murdered in trivial incident: Police unravel mystery নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় স্কুল ছাত্র খুন: রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের ইতালি মার্কেটে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিখোঁজের ২ দিন পর সেপটিক ট্যাংক থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার তারেক রহমানের নির্দেশক্রমে কবিরহাটের পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ নিজ এলাকায় হামলার শিকার এনসিপি নেতা হান্নান মাসুদ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত-১৫

প্রথম বারের মতো বাণিজ্যিক ভাবে ত্বীন ফলের চাষ করছে উত্তরবঙ্গের মতিউর মান্নান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১ ৯৬২১ বার পড়া হয়েছে
সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হিলি, দিনাজপুর প্রতিনিধি:

 

খাদ্যশষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরবঙ্গের জনপদ দিনাজপুর। এই জেলায় ধান চাষের পাশাপাশি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার ফলের চাষ। প্রতিবছরই জেলায় দেখা মিলছে নানা প্রজাতির বিদেশী ফলের। এবার জেলার দক্ষিণের উপজেলা নবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু হয়েছে মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বীন।নতুন এই ফলের চাষ শুরু করে এলাকায় মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে উপজেলার কৃষক মতিউর মান্নান। এই ফলের বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ও স্থানীয়রা। শুধু ফল চাষই নয়, বাগানটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবারের।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উত্তরবঙ্গে প্রথমবারের মতো এই ফলের চাষ শুরু হয়েছে। এই উপজেলায় ৪ বিঘা জমিতে ৫ প্রজাতির ৯০০ ত্বীন ফলের গাছ লাগিয়েছেন কৃষক মতিউর মান্নান। ইতিমধ্যে বাগানের গাছগুলোতে ফলও আসতে শুরু করেছে।

বাগান দেখতে আসা রোকন ও জুলহাজ বলেন, আমরা শুধু ফেসবুক, টিভিতে দেখি ত্বীন ফল। পবিত্র কোরআনেও এই ফলের নাম আছে। আজ বাগানে এসে বাস্তবে ফলটি দেখতে পেরে আমাদেরকে অনেক ভালো লাগলো।তারা বলেন, ফলগুলো দেখতে ডুমুর আকৃতির। একটি গাছে অনেক ফল ধরেছে। এই ফলটি আমাদের এলাকায় প্রথম চাষ হচ্ছে। ফলের বাগান দেখে আমাদের এরকম বাগান করার ইচ্ছে হচ্ছে। আমরা বাগান দেখার পাশাপাশি মতিউর মান্নানের কাছ থেকে এই ফল চাষের পদ্ধতি সর্ম্পকে অনেক কিছু জানলাম। আমরা ভবিষতে এরকম বাগান করবো।

বাগানের শ্রমিক লাবলুসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমরা ১০ জন ত্বীন ফলের বাগানে কাজ করছি। করোনায় কোনো কাজকর্ম ছিলো না। মতিউর ভাই ত্বীন ফলের বাগান করায় এখানে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এখানে কাজ করে আগের থেকে আমাদের সংসার অনেক ভালো চলছে। মতিউর ভাইয়ের মতো এলাকায় আরো যদি কেউ বাগান তৈরি করে, তাহলে আরো বেশকিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

ত্বীন ফলচাষি মতিউর মান্নান বলেন, করোনা মহামারীতে স্থবির হয়ে পড়ে পুরো দেশ। আর এ সময় ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম আমি। এরপর ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসি। পরে ছোট বোনের পরামর্শে গাজীপুর থেকে ত্বীন ফলের চারা এনে গেলো বছরের অক্টোবর মাসে ৪ বিঘা পতিত জমিতে চাষ শুরু করি। বাগান করতে গিয়ে ২৩ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ভয় পেলেও চারা রোপণের দেড় মাসের মাথায় গাছে ফল আসতে শুরু করায় আমি খুব খুশি। দুই-একটি করে ফল পাকতে শুরু করেছে। ঢাকার বাজারে ফলটির চাহিদা অনেক, দামও ভালো। প্রতিকেজি ফল বিক্রি হয় এক হাজার টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, বাগান সম্প্রসারণ করতে ইতিমধ্যে আমি গাছে কলম করতে শুরু করেছি। কলমগুলো করে বাগান সম্প্রসারণের পাশাপশি সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে পারবো।

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে গাজীপুরের পর প্রথমবারের মতো আমাদের এলাকায় এই ফলের চাষ শুরু করেছে কৃষক মতিউর মান্নান। ত্বীন ফলটি মরুভূমি এলাকার বেশি পাওয়া যায়। এটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। তাছাড়াও এর ঔষধি অনেক গুণাবলি রয়েছে। কেউ যদি এই ফলের বাগান নতুন করে তৈরি করতে চায় আমাদের কৃষি অফিস তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করবে।
তিনি আরও বলেন, এই ফল চাষাবাদে ও ভালো ফলন পেতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাগান পরিদর্শনসহ মতিউর নামের ওই কৃষককে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
নিউজ ডেস্ক
ট্যাগস :

প্রথম বারের মতো বাণিজ্যিক ভাবে ত্বীন ফলের চাষ করছে উত্তরবঙ্গের মতিউর মান্নান

আপডেট সময় : ১১:৩৯:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১

হিলি, দিনাজপুর প্রতিনিধি:

 

খাদ্যশষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরবঙ্গের জনপদ দিনাজপুর। এই জেলায় ধান চাষের পাশাপাশি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার ফলের চাষ। প্রতিবছরই জেলায় দেখা মিলছে নানা প্রজাতির বিদেশী ফলের। এবার জেলার দক্ষিণের উপজেলা নবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ শুরু হয়েছে মরুভূমির মিষ্টি ফল ত্বীন।নতুন এই ফলের চাষ শুরু করে এলাকায় মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে উপজেলার কৃষক মতিউর মান্নান। এই ফলের বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ও স্থানীয়রা। শুধু ফল চাষই নয়, বাগানটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে বেশ কয়েকটি পরিবারের।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উত্তরবঙ্গে প্রথমবারের মতো এই ফলের চাষ শুরু হয়েছে। এই উপজেলায় ৪ বিঘা জমিতে ৫ প্রজাতির ৯০০ ত্বীন ফলের গাছ লাগিয়েছেন কৃষক মতিউর মান্নান। ইতিমধ্যে বাগানের গাছগুলোতে ফলও আসতে শুরু করেছে।

বাগান দেখতে আসা রোকন ও জুলহাজ বলেন, আমরা শুধু ফেসবুক, টিভিতে দেখি ত্বীন ফল। পবিত্র কোরআনেও এই ফলের নাম আছে। আজ বাগানে এসে বাস্তবে ফলটি দেখতে পেরে আমাদেরকে অনেক ভালো লাগলো।তারা বলেন, ফলগুলো দেখতে ডুমুর আকৃতির। একটি গাছে অনেক ফল ধরেছে। এই ফলটি আমাদের এলাকায় প্রথম চাষ হচ্ছে। ফলের বাগান দেখে আমাদের এরকম বাগান করার ইচ্ছে হচ্ছে। আমরা বাগান দেখার পাশাপাশি মতিউর মান্নানের কাছ থেকে এই ফল চাষের পদ্ধতি সর্ম্পকে অনেক কিছু জানলাম। আমরা ভবিষতে এরকম বাগান করবো।

বাগানের শ্রমিক লাবলুসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমরা ১০ জন ত্বীন ফলের বাগানে কাজ করছি। করোনায় কোনো কাজকর্ম ছিলো না। মতিউর ভাই ত্বীন ফলের বাগান করায় এখানে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এখানে কাজ করে আগের থেকে আমাদের সংসার অনেক ভালো চলছে। মতিউর ভাইয়ের মতো এলাকায় আরো যদি কেউ বাগান তৈরি করে, তাহলে আরো বেশকিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

ত্বীন ফলচাষি মতিউর মান্নান বলেন, করোনা মহামারীতে স্থবির হয়ে পড়ে পুরো দেশ। আর এ সময় ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম আমি। এরপর ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসি। পরে ছোট বোনের পরামর্শে গাজীপুর থেকে ত্বীন ফলের চারা এনে গেলো বছরের অক্টোবর মাসে ৪ বিঘা পতিত জমিতে চাষ শুরু করি। বাগান করতে গিয়ে ২৩ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ভয় পেলেও চারা রোপণের দেড় মাসের মাথায় গাছে ফল আসতে শুরু করায় আমি খুব খুশি। দুই-একটি করে ফল পাকতে শুরু করেছে। ঢাকার বাজারে ফলটির চাহিদা অনেক, দামও ভালো। প্রতিকেজি ফল বিক্রি হয় এক হাজার টাকা দরে।
তিনি আরও বলেন, বাগান সম্প্রসারণ করতে ইতিমধ্যে আমি গাছে কলম করতে শুরু করেছি। কলমগুলো করে বাগান সম্প্রসারণের পাশাপশি সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে পারবো।

নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে গাজীপুরের পর প্রথমবারের মতো আমাদের এলাকায় এই ফলের চাষ শুরু করেছে কৃষক মতিউর মান্নান। ত্বীন ফলটি মরুভূমি এলাকার বেশি পাওয়া যায়। এটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। তাছাড়াও এর ঔষধি অনেক গুণাবলি রয়েছে। কেউ যদি এই ফলের বাগান নতুন করে তৈরি করতে চায় আমাদের কৃষি অফিস তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করবে।
তিনি আরও বলেন, এই ফল চাষাবাদে ও ভালো ফলন পেতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাগান পরিদর্শনসহ মতিউর নামের ওই কৃষককে সব ধরণের সহযোগিতা করা হচ্ছে।